করোনারোধে ভিটামিন ডির ভূমিকা কতটা?

45

করোনা ভাইরাসের যেহেতু কোনো প্রতিষেধক নেই এ কারণে এটি নিয়ন্ত্রণে শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ভিটামিন সি’য়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটা কমবেশি অনেকেরই জানা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে যে কোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভিটামিন ডিয়ের ভূমিকা অনেক।
আয়ারল্যান্ডের ট্রিনিটি কলেজের আইরিশ লঙ্গিচ্যুডিনাল স্টাডি অন এজিং বিভাগ থেকে জানা যায়, ভাইরাস, ব্যাকেটেরিয়া বা অন্য যাই থাকুক না কেন শরীরের যে কোনও ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভিটামিন ডি বিশাল ভূমিকা রাখে।
ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভিটামিন ডিয়ের তুলনা নেই। যক্ষা, হাঁপানি কিংবা শ্বাসতন্ত্রের যেই রোগ থাকুক না কেন ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভিটামিন ডি বেশ কার্যকর। এছাড়া হৃদযন্ত্রের নানা রোগ সারাতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি।
বিশেষজ্ঞরা জানান, যাদের স্বাভাবিক ভাবেই ফুসফুসে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি, তারা নিয়মিত ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে মৃত্যুহার করতে পারে। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য এটি খুবই দরকারি।
করোনা সংক্রমণে ফুসফুসে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ফুসফুস সুস্থ রাখা জরুরি। তাদের মতে, যদি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ফুসফুসকে সতেজ রাখা যায়, তাহলে রোগের আশঙ্কা যেমন কমবে তেমনি জটিলতাও কমবে। সেক্ষেত্রে ভিটামিন ডি গ্রহণ বেশ উপকারী হতে পারে।
ভিটামিন ডিয়ের সবচেয়ে ভালো উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। অনেকে মনে করেন, গরমের দেশে ভিটামিন ডি-র অভাব হয় না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্বকে নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় ধরে রোদ লাগলে ভিটামিন ডি তৈরি হয় ঠিকই, কিন্তু রোদ কি সব সময় পর্যাপ্ত লাগে? শীতে অনেকে কিছুক্ষণ হলেও রোদে বসেন। কিন্তু গরমের দিনে ত্বক পুড়ে যাওয়ার ভয়ে কেউ রোদে যান না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ডি পেতে দিনে কম পক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট শরীরে রোদ লাগানো উচিত। সে ক্ষেত্রে সকাল ৭-৮টার মধ্যে যদি খোলা জায়গায় যদি ৪০-৪৫ মিনিট হাটা যায় তাহলেও ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে। সম্ভব না হলে সময় পেলেই পা দুটো রোদে মেলে রাখুন। এছাড়া ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- তৈলাক্ত মাছ, ক্যানে ভরা টুনা, কমলালেবুর রস, চিজ, ডিমের কুসুম, মাশরুম, কড লিভার অয়েল ইত্যাদি খেতে পারেন। অনেকের আবার এ ধরনের খাবারে সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এছাড়া যারা করোনা ভাইরাসের বেশি ঝুকিতে আছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।