করোনাঝুঁকিতে কাজ করছেন চা শ্রমিকরা

58

ব্র্যাক পরিচালনাধীন রাঙ্গুনিয়ার কোদালা চা বাগানে শ্রমিকরা মারাত্মক ঝুঁকিতে নিরলসভাবে চা পাতা তোলা ও অন্যান্য কাজ করছেন। প্রতিদিন দল বেধে তারা চা পাতা তোলার কাজে ব্যাস্ত। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে তাদের ধারণাও কম। এ মহামারি নিয়েও তাদের তেমন মাথাব্যাথা নেই। জীবন সংসার চালাতে তারা চা বাগানের গন্ডি ছেড়ে কখনও অন্য কোথাও যাওয়ার সময় সুযোগ পাননা। তাদের নেই বিত্তবানদের মত বিলাসবহুল জীবন যাপনের স্বপ্ন।
বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশেও করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ইতিপূর্বে সশস্ত্র বাহিনীকে নামানো হয়েছে মাঠে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সাধারণ ছুটি ও গণপরিবহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তারপরও ছুটি নেই রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা চা বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের। এ সকল বাগানে প্রতিদিনই কাজ করছেন শত শত চা শ্রমিক।
তবে কোদালা চা বাগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশ না পাওয়ায় আমরা বাগানে চা পাতা তোলা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকরা দূরত্ব বজায় রেখে চা পাতা তুলছেন। বাগান থেকে চা পাতা তোলা ও ওজন দেওয়ার সময় দূরত্ব বজায় রাখছি। এ ছাড়া
আমরা চা শ্রমিকদের হাত দোয়ার ব্যবস্থা করেছি, মাস্ক দিয়েছি। তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সব ব্যবস্থা নিয়েছি।
জানা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর পাশে এগিয়ে আসছেন না কেউ। দেশের সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হলেও এখনো ছুটি পাননি চা শ্রমিকরা। ফলে চা শ্রমিকদের মাঝে বাড়ছে করোনার ঝুঁকি।
কোদালা চা বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনের মতোই সকাল থেকে চা-শ্রমিকরা কাজ করছেন। তারা জানান, তাদের ছুটি নেই। তাই কাজে এসেছেন। আর কাজ না করলে খাবেন কি। মালিক ও বড় বাবুরা ঘরে বসিয়ে টাকা দিবেন না।
শ্রমিকরা বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে শুনেছি। তবে উপরওয়ালা আমাদের রক্ষা করবেন।
কোদালা চাবাগানের মহিলা চা শ্রমিক মিনু আকুড়ী, আশা বাওড়ী, কুসুমা আকুড়ী, নিপু রায়, মুন্নি রায় ও রুমী রায় জানান, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে শুনেছি। তবে এ রোগে সারাবিশ্বে মানুষ মারা যাচ্ছে অকাতরে তা জানি। আমাদের দেশেও মারা যাচ্ছে। আমরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। দেশে সরকার সবাইকে ছুটি দিয়েছে। খাবার ও টাকা দিচ্ছে। আমাদের কেউ কিছু দিচ্ছে না। সামান্য আয়ের চা পাতা তোলা কাজ। কত কেজি চা পাতা তুলতে পারি দিনে। যে খরা পড়ছে। আমাদের পাশে দাড়ানোর জন্য কেই এগিয়ে আসেনি। মরা বাচা আমাদের বাগান নিয়ে। আমরা রাতদিন হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে মানবেতন জীবন যাপন করছি।
কোদালা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল লতিফ জানান, করোনা ভাইরাস সর্ম্পকে ইতিমধ্যে শ্রমিকদের সচেতন করা হয়েছে। শ্রমিকদের মাস্ক ও সাবান দেয়া হয়েছে। ছুটির বিষয়ে আমরা ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা পাইনি। তবে চা শ্রমিকদের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ নিচ্ছি।