করোনাকালেও থেমে নেই ইয়াবা পাচার

63

রাজবাড়ি থেকে দুই ব্যক্তি প্রাইভেট কার নিয়ে বেড়াতে যান কক্সবাজার। সেখান থেকে ফেরার পথে কারযোগে নিয়ে যাচ্ছিলেন ইয়াবা। কিন্তু বাধ সাধল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জারটেক পার হওয়ার সময় পুলিশ চেকপোস্টে ধরা পড়ে তারা। এসময় প্রাইভেটকার তল্লাশি করে জব্দ করা হয় ৮০ হাজার ইয়াবা। গ্রেপ্তার করা হয় মো. আশরাফুজ্জামান (৩২) ও রাসেল রানা (৩৫) নামে দু’ব্যক্তিকে।
একইদিন মহেশখালী থেকে উদ্ধার করা হয় দেড় লাখ পিস ইয়াবা। ত্রাণের গাড়িতে করেই পাচার করা হচ্ছিল ইয়াবা। ছোট মহেশখালী লম্বারঘোনা বাজার এলাকায় ত্রাণবাহি একটি পিকআপ নিয়ে স্থানীয় জনতার সন্দেহ হলে তারা সেটি আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে পিকআপ থেকে দেড় লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার ও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে গেল সপ্তাহে পটিয়া থেকেও পাচারকালে উদ্ধার করা হয় ২০ হাজার পিস ইয়াবা। টেকনাফে বিজিবি উদ্ধার করে দু’লাখ পিস ইয়াবা। গত ২৯ এপ্রিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি টোল প্লাজায় চিকিৎসকের স্টিকার লাগানো একটি প্রাইভেটকার থেকে ১৭ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসময় গাড়িতে থাকা ডা. রেজাউল হককেও আটক করা হয়। জব্দ করা হয় চিকিৎসকের প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-২৩-৩৭১৯)।
দেশে চলছে করোনা মহামারী। এ পরিস্থিতিতেও থেমে নেই ইয়াবা পাচার। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে একের পর এক ইয়াবা পাচার করছে কারবারিরা। ইয়াবা পাচারে পণ্য বহনকারী পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স কিংবা চিকিৎসকের স্টিকার লাগানো প্রাইভেটকারসহ নানা ধরনের যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে। নিত্য নতুন কৌশলও গ্রহণ করেছে পাচারকারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতেও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা আসা বন্ধ নেই। প্রতিদিনই পার হচ্ছে লাখ লাখ ইয়াবা। সীমান্ত দিয়ে আসার সময় গত একমাসে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ পিস ইয়াবা। আগে ইয়াবা পাচারে বাস, ট্রাক ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে এসব পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় পাচারকারীরা পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স, পাজেরো, প্রাইভেটকারকে বাহন হিসেবে বেছে নিয়েছে। অনেকে ত্রাণের নামে পাচার করছে ইয়াবা। কক্সবাজার এলাকায় ত্রাণ দিতে যাওয়ার নাম করে আসার সময় নিয়ে আসছে ইয়াবা। রোগী আনার নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে আসছে ইয়াবার চালান। ত্রাণের গাড়ি হওয়ায় মানবিক কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশি করে না। এ সুযোগে চক্রটি ইয়াবা পাচার করছে প্রতিনিয়ত।
জানা গেছে, ফিরিঙ্গিবাজার ফিশারীঘাট এলাকায় শনিবার জব্দ করা হয়েছে ৫ হাজার ইয়াবা। পিকআপযোগে এসব ইয়াবা পাচার করা হচ্ছিল। সীতাকুন্ড থেকে জব্দ করা হয় ১০ হাজার ইয়াবা। গত ২৭ এপ্রিল মুরাদপুর থেকে ৪০ হাজার ইয়াবা ও ২২ এপ্রিল নগরীর অক্সিজেন এলাকা থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। নগর গোয়েন্দা পুলিশ কদমতলী, বায়েজিদ, অক্সিজেন থেকে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।
র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল পূর্বদেশকে বলেন, র‌্যাব করোনাকালেও মাদক পাচারের ওপর নজর রাখছে। ত্রাণ বা কক্সবাজার সড়কে চলাচলকারি প্রতিটি গাড়ির ওপরই র‌্যাবের কড়া নজরদারি রয়েছে। দামি গাড়িও নজরদারি থেকে বাদ যাচ্ছে না। তিনি বলেন, করোনায় ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে মাদক কারবারের চেষ্টা চলছে, র‌্যাব সদস্যরা তৎপর রয়েছে।