কম দামে ব্রয়লার মুরগি কিনে বেশি টাকায় বিক্রি

34

নিজস্ব প্রতিবেদক

অভিযান চারিয়েও ব্রয়লার মুরগির দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না। রোজার মাসেও ভোক্তার পকেট কাটতে একটুও চিন্তা করছে না বিক্রেতারা। কম টাকায় কিনেও অধিক লাভে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, খামারে ওজনে কম দেওয়া হয়। তাই বেশি লাভে বিক্রি করতে হয়। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে কমে আসবে ব্রয়লার মুরগির দাম।
এদিকে ব্রয়লার মুরগির দামে অনিয়মের খবরে নগরীর কাজীর দেউড়ি বাজারে গতকাল মঙ্গলবার অভিযান পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে দেখা যায়, ১৬৫ টাকায় কেনা মুরগি ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিলো।
ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি টিম সেখানে অভিযানে যায়। অভিযানের পর প্রতিকেজি মুরগি দাম কেজি প্রতি কমে হয়ে যায় ১৮০ টাকা। এ সময় বেশি দামে মুরগি বিক্রি করায় এক বিক্রেতাকে জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তবে বিক্রেতাদের অভিযোগ, খামার থেকে কেনার সময় মণ প্রতি এক থেকে দেড় কেজি কম দেওয়া। তাই তারাও দাম বাড়িয়ে মুরগি বিক্রি করছেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ জানান, ক্রয়মূল্যের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের অসঙ্গতি পাওয়ায় এক মুরগি বিক্রেতাকে ৫ হাজার জরিমানা করেছি। পাশাপাশি আমরা সকল মুরগি বিক্রেতাকে প্রশ্ন করেছি, চট্টগ্রামের সব বাজারে ১৮০ টাকায় মুরগি বিক্রি হচ্ছে, এখানে ১৯০ টাকায় কেন? এরপর তারা ১০ টাকা দাম কমিয়েছে।
তিনি আরও জানান, রমজান উপলক্ষে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন বাজারে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। আজকের অভিযানে আমরা মুরগির ক্রয়মূল্যের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের অসঙ্গতি পেয়েছি। তবে আমাদের প্রতিদিনের অভিযানের কারণে ভোগ্যপণ্যের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা চলে যাওয়ার পর যেন কেউ মূল্য তালিকা না সরায় বা বাড়তি দরে পণ্য বিক্রি না করে, সে ব্যাপারে আমরা ব্যবসায়ীদেরকে সতর্ক করেছি। আমরা আশা করছি, ধীরে ধীরে কমে আসবে ব্রয়লার মুরগি দাম।
এদিকে বাঁশখালী উপজেলায় বিভিন্ন মুরগির দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, মুরগির দোকানগুলোতে কোনো মূল্য তালিকা নেই। ইচ্ছেমত দাম নির্ধারণ করে ভোক্তাদের পকেট কাটছেন বিক্রেতারা। এই রোজার মাসে প্রতি কেজি মুরগিতে একজন ব্যবসায়ী ৫০ থেকে ৭০ টাকা লাভের আশা করে। রোজার মাস সংযমের মাস সকল কিছুতে সংযম থাকা আবশ্যক।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। ডিসেম্বর মাসে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ থাকলেও জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারি মাসে তা বেড়ে ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। মার্চ মাসে দাম আরও বেড়ে কেজি প্রতি ২৩০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
এদিকে গত ২৩ মার্চ মুরগির দাম নিয়ে পোল্ট্রি শিল্প মালিকদের সাথে আলোচনায় বসে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এতে পাইকারিতে প্রতি কেজি মুরগির দাম ৩০ খেকে ৪০ টাকা কমানোর আশ্বাস দেন পোল্ট্রি শিল্প মালিকরা। তবে পাইকারিতে কমলেও খুচরাতে দাম আগের মত রেখে দেন বিক্রেতারা।