কন্টেইনারে খেলতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল ফাহিম দাবি মালয়েশিয়ার

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালয়েশিয়ায় যাওয়া একটি জাহাজের কন্টেইনার থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোর ‘খেলতে গিয়ে’ ওই কন্টেইনারে আটকা পড়েছিল বলে দাবি করেছে স্থানীয় পুলিশ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে (এফএমটি)’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
কিশোরটি চট্টগ্রাম থেকে গেছে বলে ধারণা করছেন কেলাং সিলাতান জেলা পুলিশের প্রধান চা হুঅং ফং। তার বরাতে এফএমটি জানিয়েছে, ওই কিশোরকে দুর্বল অবস্থায় পাওয়া গেছে। উদ্ধারের পর তাকে কেলাংয়ের টেঙ্কু আমপুয়ান রহিমা হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজ’র
পুলিশ কর্মকর্তা চা হুঅং ফং বলেছেন, ফাহিম জানিয়েছে, সে তার বন্ধুদের সাথে কন্টেইনারের ভিতর খেলছিল। পরে সে নিজেকে কন্টেইনারের ভিতর আটকা দেখতে পায়।
সংবাদমাধ্যম মালয়মেইল লিখেছে, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশে ইসমাইল শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ‘ফাহিম’ নামের ওই বাংলাদেশি কিশোর মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে তারা মনে করছেন না। কিশোরটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে।
গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা হয়েছিল মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ‘এমভি ইন্টিগ্রা’ নামের জাহাজটি, ১৭ জানুয়ারি সেটি মালয়েশিয়ার বন্দরে ভিড়ে।
মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে পৌঁছার পর মঙ্গলবার রাতে খালি একটি কন্টেইনার থেকে আনুমানিক ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয় বলে জাহাজটির বাংলাদেশি এজেন্ট কন্টিনেন্টাল ট্রেডার্স (বিডি) লিমিটেডের এক কর্মকর্তা জানান।
জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটি থেকে ১৩৩৭ টিইইউ’স কন্টেইনার নিয়ে পোর্ট কেলাংয়ের উদ্দেশে ছেড়ে গিয়েছিল।
ওই কিশোরের কন্টেইনার থেকে বেরিয়ে আসার কয়েকটি ভিডিও মালয়েশিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। তাতে দেখা যায়, কিশোরটি বাংলায় কথা বলছে। সেখানে বাংলাভাষী এক ব্যক্তি তাকে নাম জিজ্ঞেস করলে, সে জানায় তার নাম ‘ফাহিম’।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশে ইসমাইল বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ছেলেটি কন্টেইনারে ঢোকার পর ঘুমিয়ে পড়েছিল। পরে সে এখানে এসে পৌঁছায়। ফাহিম নামের ছেলেটি মানব পাচার চক্রের শিকার নয়। বাংলাদেশ থেকে আসা একটি কন্টেইনার পোর্ট কেলাংয়ে নামানো হলে তার ভিতর ছেলেটিকে পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে এবং তাকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
একই জাহাজে করে শিশুটিকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টকে জানানো হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী সাইফুদ্দিন।
ওই জাহাজের বাংলাদেশি এজেন্ট কন্টিনেন্টাল ট্রেডার্স (বিডি) লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক এস এম ফয়সল বুধবার বলেন, জাহাজটি পোর্ট কেলাংয়ের আউটারে পৌঁছানোর পর সেখানে কন্টেইনারের ভেতর থেকে মানুষের আওয়াজ শুনতে পান ক্রুরা।
জাহাজের ক্যাপ্টেন স্থানীয় বন্দর কর্তৃপক্ষকে খবরটি জানালে সেখানকার প্রতিনিধি ও মেরিন পুলিশ জাহাজে যায় এবং কন্টেইনারটি শনাক্ত করার চেষ্টা করে। জাহাজটিকে জরুরি ভিত্তিতে জেটিতে ভিড়িয়ে কয়েকটি কন্টেইনার নামিয়ে সেটি শনাক্ত করা হয়। পরে জাহাজের মালয়েশিয়ার এজেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশি এজেন্টের কাছে খবরটি আসে।
খালি কন্টেইনারটি চট্টগ্রামের নেমসন ডিপো থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে জাহাজ তোলা হয় বলে জানান এস এম ফয়সল। নেমসন ডিপো চট্টগ্রামের সীতাকুলঅ উপজেলার কুমিরার উত্তর সোনাইছড়ি এলাকায়। এর মালিক রিলায়েন্স শিপিং।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর থেকে আমাদের এখনও এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। জানালে আমরা তদন্ত শুরু করব।
“কন্টেইনারটি নেমসন ডিপো থেকে গেছে সেটা ঠিক। কিন্তু কন্টেইনারের ভিতর কিভাবে মানুষ ঢুকলো, কোথা থেকে কিভাবে কখন উঠল তা তদন্ত না করে বলা যাবে না।”