কঠোর লকডাউনও মানতে চাইছে না সাধারণ মানুষ

29

সবুর শুভ

করোনা সংক্রমণ কমার প্রবণতা এখনও লক্ষ্যণীয় নয়। শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ভয়ানকভাবে বেড়ে চলেছে। সংক্রমণের এ উচ্চহারের সাথে স্বাস্ব্যবিধি কঠোরভাবে মানার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বাস্তবিক চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো।
এরই মধ্যে গতকাল রবিবার থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের গামের্ন্টস কারখানাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। এ কারণে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্রমিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য যানবাহন চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের সুযোগকে কেন্দ্র করে পুরো দিন চলেছে যানবাহন। শহরে গ্রামে সবখানে একই অবস্থা। রাস্তার সার্বিক পরিবেশ বলছে ‘কঠোর লকডাউন’ মানতে চাইছেন না সাধারণ মানুষ। পেটের দায়ে বেরিয়ে পড়ছেন বাইরে। দিন দিন রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণ যে আরও ভয়ানক হবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পুস্পল।
এদিকে লকডাউন মানানোর ব্যাপারে খুব একটা তৎপর নয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও। মূল সড়কে যানবাহন ও মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সাধারণ দোকানদারদের অলিতে গলিতে দোকান খুলে কেনাবেচা করতে দেখা গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে দোকানের দরজা সামান্য খোলা রেখেই নগরীর মূল সড়ক লাগোয়া দোকানিরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ শুরু হয়। এ সময় গার্মেন্টসহ সব ধরনের শিল্পকারখানা ও সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। জরুরিসেবা, গণমাধ্যম ও খাদ্য উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট পরিবহন ছাড়া সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকার কথা বলা হয়। গণপরিবহন বিশেষ করে বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে কঠোর লকডাউন ততই ঢিলেঢালা হয়েছে। অবশ্য শহরে ঢুকা ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে চেকপোস্ট বসিয়ে কড়াকড়ি করা হয়। বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে নামানো হয় সেনাবাহিনী-বিজিবি-পুলিশ-র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এর আগে কঠোর লকডাউনে ২৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে ঈদের তৃতীয় দিন ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪ দিনের কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। এরই মধ্যে গতকাল রবিবার শিল্প কারখানা চালুকে কেন্দ্র করে লঞ্চ ও যানবাহন চলাচলের উপর বিধি নিষেধ শিথিল করা হয়। শ্রমিকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে গত শনিবার সরকার এ সিদ্ধান্ত দেয়। তাছাড়া শ্রমিকদের আনার জন্য বাস চলাচল করতে পারবে বলেও জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান জানান, রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরার সুবিধার্থে রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে সরকারের এ ঘোষণাকে সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন রাস্তায় নেমে পড়েছে। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় এগুলোকে ঠেকানোও কঠিন হয়ে পড়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য। রাস্তায় শুধু যানবাহন নয়, মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে যতœবান হওয়ার পরিবর্তে না মানার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।