কঠোর দরিদ্রতায় হার মানেনি পিতৃমাতৃহীন চশিংমং মারমা

12

কাপ্তাই প্রতিনিধি

জন্মের পর বাবাকে চোখে দেখেনি সে, মায়ের হাত ধরে বেড়ে উঠলেও তিনবছর আগে মাকেও হারালো। এরপর সংসারে ছিল কঠোর দারিদ্রতা। এমন কঠিন পরিস্থিতি জয় করে ২০২৩ সালে প্রকাশিত এইচএসসি’র ফলাফলে কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী সরকারি কলেজ হতে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করলো চশিংমং মারমা। তিনি রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের মুরালীপাড়ার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পিতা মংমিচিং মারমা জীবিত আছেন কিনা এখনো সন্ধান দিতে পারেনি চশিংমং মারমা। তার মাতা মৃত মেবুচিং মারমা বিগত ৩ বছর আগে পরলোক গমন করেন। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রæয়ারি) মুঠোফোনে চশিংমং মারমার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আমি জন্মের পর পিতাকে দেখেনি। মার মুখে শুনেছি তিনি আমাদের ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কিনা জানিনা। বিগত ৩ বছর আগে মাকে হারিয়েছি। দু’ভাইবোনের মধ্যে বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। সংসারে বর্তমানে আমি একা। টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালাতাম। তবে বড়বোন এবং বোনের স্বামী আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। জিপিএ-৫ অর্জনের পিছনে আমার কলেজের শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। শিক্ষকরা আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষকগণ আমাকে সব সময় সাহস যোগাতেন। আমি আজ এই অর্জনে আমার হারানো মাকে স্মরণ করছি। মায়ের আশীর্বাদ ও শিক্ষকদের আশীর্বাদ ছিল বলে আমি ভালো ফলাফল অর্জন করেছি।
বিশেষ করে আমার প্রাইভেট শিক্ষক আনোয়ার স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। চশিংমং মারমা আরও জানান, ভবিষ্যতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে। আমি আইন বিভাগে লেখাপড়া করে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কাজ করতে চাই। কর্ণফুলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এএইচএম বেলাল চৌধুরী জানান, চশিংমং অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছেলে। সে জীবনে এত সংগ্রাম করার পরেও নিয়মিত কলেজে আসতো, ক্লাস করতো। প্রতিটি শিক্ষকের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল তার। এছাড়া চশিংমংকে উপবৃত্তি এবং কলেজ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেতে সহযোগিতা করেছি। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।