ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কাজে আর বাধা নেই

13

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ নুশরাত জাহানের আদালত ওয়াসার বিরুদ্ধে হালিশহর এলাকার ছৈয়দ মো. এনামুল হক মুনিরী কতৃক দায়েরকৃত প্রতিনিধিত্বমূলক অপর মোকদ্দমা (নং-১৫৩/২০) খারিজ করে দিয়েছেন। এর আগে গত ৩০ মে আদালতে ওয়াসার পক্ষে মামলাটি দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের অর্ডার ৭, রুল ১১ (ডি) ও ১৫১ ধারা অনুযায়ী অচল ও অরক্ষণীয় হওয়ায় আর্জি খারিজের আবেদন করে। বাদী পক্ষ গত ১৬ জুন লিখিত আপত্তি দাখিল করলে দোতরফা শুনানি হয়, যার প্রেক্ষিতে গতকাল আদেশে আদালত এই মামলা খারিজ করেন। ওয়াসার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্রডের বিরুদ্ধে আইনানুগ স্বত্ব, স্বার্থ, অধিকার, দখলহীন ব্যক্তি কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ীও অচল হয়। চার হাজার কোটি টাকায় নির্মিতব্য চট্টগ্রাম ওয়াসার সুয়ারেজ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে দোতরফা শুনানি শেষে নিষেধাজ্ঞার আবেদনও খারিজ করা হয়।
ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলাটি অচল হওয়ায় আদালত কর্তৃক গতকাল প্রচারিত আদেশের ফলে চট্টগ্রাম ওয়াসার চার হাজার কোটি টাকার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কাজে আর কোনো আইনি প্রতিবন্ধকতা থাকল না। ৩য় যুগ্ম জেলা জজ নুশরাত জাহান এর আদালত গত ৪ এপ্রিল একতরফা শুনানি শেষে ১নং বিবাদী ওয়াসা ও ২নং বিবাদী সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসককে আপত্তি দাখিল শেষে শুনানি পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দ্বারা থামতে বলা হয়। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পটি থমকে যায়। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম ওয়াসা, জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ভূমি প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে হালিশহরে ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা চেয়ে ২০২০ সালে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক মামলাটি দায়ের করেছিলেন স্থানীয় সৈয়দ মুহাম্মদ এনামুল হক প্রকাশ ছৈয়দ মুহাম্মদ এনামুল হক মুনিরী। অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশটি প্রচারিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম ওয়াসার পক্ষে গত ১০ এপ্রিল ওকালতনামা যোগে হাজির হয়ে নিষেধজ্ঞার বিরুদ্ধে গত ১১ এপ্রিল লিখিত আপত্তি দাখিল করলে দোতরফাসূত্রে শুনানি হয়। উভয়পক্ষকে শুনানি শেষে আদালত আদালত গত ১৮ এপ্রিল নিষেধাজ্ঞা খারিজ আদেশটি প্রচার করেন। আদেশে আদালত উল্লেখ করেন, মূলত প্রকল্পটি একটি বৃহৎ জনস্বার্থের জন্য গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প এবং বর্তমানে প্রকল্পের কাজ চলমান এবং বাদী ও অন্যান্য ভূমি মালিকদের যদি যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া না হয় তবে তা আদায়ের জন্য একটি চলমান প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখলে তা বাদী পক্ষ এবং অন্যান্য ভূমি মালিকদের ক্ষতির তুলনায় বেশী ক্ষতির আশংকা তৈরি করবে । এছাড়াও যেহেতু মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে স্থানীয় জেলা প্রশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নিমিত্তে অধিগ্রহণকৃত ভূমি, ভূমি মালিকগণের বরাবরে পুনরায় ফিরিয়ে দেবার সুযোগ নাই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভূমি মালিকগণের ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির সুযোগও যেহেতু বন্ধ হয়ে যাবে না সেহেতু এক্ষেত্রে বাদীর এবং অন্যান্য ভূমি মালিকগণের অপূরণীয় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না এবং সুবিধা অসুবিধাতার ভারসাম্য বিবেচনায় বাদীর আবেদন মঞ্জুর করা হলেই বরং বিবাদী পক্ষের অনুক‚লে ক্ষতির পরিমাণ যা মূলত একটি জাতীয় স্বার্থকে ব্যাহত করবে প্রতীয়মান হয়। এই অবস্থায় আদেশ হয় যে, ওই অস্থায়ী নিষেধজ্ঞার দরখাস্তটি ১নং বিবাদীর বিরুদ্ধে দোতরফা সূত্রে ও অন্যান্য বিবাদীর বিরুদ্ধে এক তরফা সূত্রে নামঞ্জুর করা হল । এই আদেশ দ্বারা বিগত ৪ এপ্রিলের এক তরফা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করা হল ।
এই বিষয়ে এডভোকেট জিয়া হাবীব আহ্সান বলেন, প্রকল্পটি জনস্বার্থে সরকারের চার হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প। এটা চট্টগ্রামের স্যুয়ারেজ সিস্টেমকে আধুনিকরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গ্রান্ড যা কোনো ঋণ নয়। এই প্রকল্প চট্টগ্রামকে হেলদি সিটি রূপায়ন প্রকল্প বা বিশাল কর্মযজ্ঞ। চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য সরকারের সানুগ্রহ অনুমোদন গ্রান্ড প্রায় চার হাজার কোটি টাকার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক মনিটরিং করা হচ্ছে ।