ওয়াটার বাসের কার্যক্রম পরিদর্শনে চসিক মেয়র

37

সদরঘাট থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত ওয়াটারবাসের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ওয়াটারবাস কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে তিনি শুক্রবার বিকেলে তাদের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। মেয়র ওয়াটারবাস টার্মিনাল পৌঁছালে ওয়াটারবাস কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শাখাওয়াত হোসেন মেয়রকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে টার্মিনালের সুযোগ সুবিধাদি দেখান। এরপর সিটি মেয়র এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বিকেল ২.৪৫টায় সদরঘাট ওয়াটারবাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং ৩.১০ মিনিটে পতেঙ্গা ওয়াটারবাস টার্মিনালে পৌঁছান। সেখান থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সাটল বাসযোগে ৩ মিনিটে বিমান বন্দর পৌঁছেন। এতে সর্বমোট সময় ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩০ মিনিট। সেখান থেকে মেয়রসহ অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে পুনরায় সদরঘাট টার্মিনালে ফিরে আসে ওয়াটারবাসটি। উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অনুভূতি ব্যক্ত করে সিটি মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম শহরে যানজটের কারণে বিমান যাত্রীদের বিমান শিডিউল ধরতে অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এই ভোগান্তি থেকে উত্তোরণের জন্য নগরবাসী দীর্ঘদিন থেকে দাবি দিয়ে আসছিল। কর্ণফুলী নদীতে ওয়াটারবাস চালু এই দাবির মধ্যে অন্যতম। এস এস ট্রেডিং কর্পোরেশন নগরবাসীর দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে ‘কর্ণফুলী নদীতে ওয়াটারবাস সার্ভিস’ চালুর উদ্যোগকে অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রতিদিন গড়ে ৮ হাজার যাত্রী হযরত শাহ্ আমানত বিমান বন্দরে আসা-যাওয়া করে। এই পথে মানুষের সময় বাঁচবে, তেমনি শব্দ ও বায়ু দূষণ থেকে যাত্রীদের রক্ষা করবে এবং শহরের রাস্তার ওপর অনেক চাপ কমবে। বিমান যাত্রীরা অল্প ও নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। তিনি ওয়াটারবাস চালু ও সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য এস এস ট্রেডিং কর্পোরেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের সার্ভিস, যা আমরা বিদেশে দেখতে পাই। তিনি সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে প্রকল্পে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন।
পরিদর্শনকালে রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, কাউন্সিলর সালেহ আহমদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. আলমগীর অপু, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, সহকারী একান্ত সচিব রায়হান ইউসুফ, এস এস ট্রেডিং এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. সাববাব হোসেন, জসিম উদ্দিন চৌধরী, এস এস ট্রেডিং এবং টিএস ড্রেজিং এর পিআর এডভাইজার এপ্রোচ পি আর গেøাবার লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়লা আবেদীন সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
যাত্রীদের অধিক সুবিধা ও নিরাপত্তার কথা ভেবে ৩৭ ফিট দৈর্ঘ্য, ১১ ফিট প্রস্থ এবং ২টি ২০০ এইচ.পি জাপানি ইয়ামাহা ইঞ্জিন সমৃদ্ধ ২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়াটার বাস নির্মাণ করা হয়েছে, যা প্রতিঘন্টায় ৩৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলাচল করতে সক্ষম। আরও ২টি ওয়াটার বাস নির্মাণাধীন রয়েছে যা সদরঘাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত যাত্রীদের আনা নেওয়া করবে। প্রতিটি ওয়াটারবাসের ধারণক্ষমতা ৩০জন। ২টি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত বাস রয়েছে যা পতেঙ্গা জেটি থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত যাত্রীদেরকে আনা-নেওয়া করবে। বিমান বন্দরের ফ্লাইটের সাথে সমন্বয় রেখে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এ সার্ভিস চালু থাকবে। এছাড়া সদরঘাটে একটি অত্যাধুনিক শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত দ্বিতল টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে যাত্রীদের জন্য ওয়েটিং লাউঞ্জের ব্যবস্থা রয়েছে। যাত্রীরা তাদের লাগেজ কাউন্টারে জমা দিলে ওয়াটারবাস কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে তাদের লাগেজ শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এবং বিমান বন্দর থেকে সদরঘাট পৌঁছে দিবেন। বিজ্ঞপ্তি