ওয়াংঝুকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানাবে যুক্তরাষ্ট্র

35

চীনের টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়ের সিএফও মেং ওয়াংঝুকে হস্তান্তরের জন্য কানাডার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাবে যুক্তরাষ্ট্র। কানাডা সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে তাদের এ পরিকল্পনা অবহিত করেছে বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত কানাডীয় রাষ্ট্রদূত ডেভিড ম্যাক নাউটন। কানাডার দৈনিক ‘দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল’ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাউটন একথা জানান।
কানাডায় আটক মেং ওয়াংঝুকে ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগে বিচারের জন্য চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্র কবে নাগাদ কানাডা কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানাবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি নাউটন।
নিয়মানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রকে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যেই কানাডাকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানাতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে গত ১ ডিসেম্বর কানাডার ভ্যাঙ্কুভার থেকে হুয়াওয়ের গ্লোবাল চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার মেংকে গ্রেপ্তার করা হয়, সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে তাকে হস্তান্তর করার নিয়ম রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা সত্বেও একটি প্রতিষ্ঠান ইরানের কাছে উপকরণ বিক্রির চেষ্টা করেছে এবং ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হুয়াওয়ের সম্পর্ক আড়াল করার চেষ্টা করেছেন ৪৬ বছরের মেং। মেংকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হলে তিনি বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতারণার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগের মুখে পড়তে পারেন। এ ধরনের এক একটি অভিযোগে তার সর্বোচ্চ ৩০ বছর করে কারাদন্ড হতে পারে। মেং টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ‘হুয়াওয়ে টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড’র প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেইয়ের কন্যা।

মেংকে গ্রেপ্তারের পর একে ‘অত্যন্ত ন্যক্কারজনক’ ঘটনা বলে মন্তব্য করেছিল চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গ্রেপ্তারের পর তিন দিনের শুনানি শেষে গত ১১ ডিসেম্বর কানাডার একটি আদালত মেংকে জামিনে মুক্তি দেয়। তবে তাকে সব সময় পায়ের গোড়ালিতে একটি নজরদারি ডিভাইস পরে থাকার শর্ত দেওয়া হয়।

মেংকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে কানাডা ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এ ঘটনার জেরে চীন কানাডার দুই নাগরিককে আটক করেছে এবং মাদক পাচারের অভিযোগে অন্য একজনের সাজা বাড়িয়ে মৃতু্দন্ড দিয়েছে। যদিও বেইজিং বলেছে, এর সঙ্গে মেংকে গ্রেপ্তারের ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। মেংকে হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, চলমান আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের কিছু বলার নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের মুখপাত্র বলেন, “আমরা হস্তান্তরের কাগজপত্র জমা দেওয়ার মাধ্যমে এ বিষয়ে জানাব।” কানাডার বিচার বিভাগ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
অন্যদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আবারও মেংকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছে, “পরিষ্কারভাবে তার মামলা অন্যান্য মামলা থেকে আলাদা।” কানাডা এ ক্ষেত্রে ‘গুরুতর ভুল’ করছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেন, “চীনের একজন নাগরিকের নিরাপত্তা ও আইনি অধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছামত তাদের দ্বিপাক্ষিক বহিঃসমর্পণ চুক্তির অপব্যবহার করছে।” যুক্তরাষ্ট্রকে এই ‘ভুল’ শুধরে নেওয়ার ‘জোর অনুরোধ’ করেছে চীন।