ওমিক্রন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের উপরে সকলের সতর্কতা অবলম্বন জরুরি

22

 

সমগ্র বিশ্বে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। কোন কোন দেশে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ওমিক্রন ছড়ানোর ১৫ সপ্তাহ পর আমাদের দেশেও ৫ শতাংশের উপরে এর শনাক্তের হার দেখা যাচ্ছে। ওমিক্রন ছড়ানো দেশের জন্য শুভ নয়। ডেল্টার চেয়েও মারাত্মক ওমিক্রন। করোনার ওমিক্রন ধরন দেশে ঢুকে পড়া একটি অশুভ লক্ষণ। এই ভেরিয়েন্ট ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়লে দীর্ঘ আঠারো মাস অচল থাকার পর দেশের যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু হয়েছিল তা আবার হোঁচট খেতে পারে। দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ব বিদ্যালয় দীর্ঘদিন অচল থাকার পর সীমিতভাবে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলও প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু ওমিক্রন ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়লে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পুনরায় ব্যাহত হবার সম্ভাবনা। বর্তমানে এইচএসসির ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ওমিক্রন হয়তো ভর্তি হবার পর ২০২২ সালের শিক্ষার্থীদের এইচএসসির ক্লাস কার্যক্রম ব্যাহত করবে।
সরকার সাধারণ মানুষকে টিকা প্রদান করে যাচ্ছে। পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানও চলছে। তবে এখনো দেশের সকল মানুষ এবং সর্বস্তরের শিক্ষার্থী টিকা কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি সরকার। সরকারের প্রচেষ্টা ও সদইচ্ছার অভাব নেই। কিন্তু নানা কারণে দেশের সব ধরনের নাগরিকদের টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। টিকা কার্যক্রম চলছে দ্রুত। এর পরও ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট দেশের মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। দেশের মানুষের আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধির উপর জোর দেয়া জরুরি। দেশ বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশে উন্নিত হবার দৌড়ে রয়েছে। এমতাবস্থায় ওমিক্রন যেন বাধা তৈরি করতে না পারে- এ বিষয়ে সরকার এবং দেশের জনগণকে সতর্কতার সাথে জীবনযাপন করতে হবে। জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই। টিকা করোনা ভাইরাসের আক্রমণ হতে শতভাগ রক্ষা করতে সক্ষম নয়। তাই দেশের মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। ‘মাস্ক’ বিষয়ে ডাক্তাররা আরো সচেতন হবার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা মাস্কের ধরন পরিবর্তনের উপরও জোর দিচ্ছেন।
করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের মানুষের পক্ষে ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়। দেশের কৃষি শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, বিনোদন সবকিছু ঠিক রেখে ওমিক্রনের মতো মারাত্মক করোনার ধরণ মোকাবিলা করতে হবে সরকার ও দেশের নাগরিকদের। নতুন করে ভাবতে হবে সরকার ও দেশের মানুষকে কি ভাবে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রেখে এ ভেরিয়েন্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। দু’হাজার বিশ সালের মতো লকডাউন লকডাউন খেলা দিয়ে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষা থেকে শুরু করে দেশের সকল কার্যক্রম চালু রেখে আমাদের পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। যার জন্য অধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থার আওতায় থাকতে হবে ছাত্র-শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষকে। অফিস আদালত, ব্যাংক, বীমা, শিল্প- উৎপাদন সবকিছু ঠিক রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যতটুকু পারা যায় ওমিক্রনের মতো বৈশ্বিক মহামারির হাত হতে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
আমরা স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে নিজেরা সতর্ক হই এবং অন্যদেরও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিই। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালন করা গেলে ওমিক্রন দেশের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি করতে পারবে না এমন অভিমত বিশেষজ্ঞদের। তাই আমরা সবাই কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালনের অভ্যাস করি। করোনা ছড়ানোর বিপরীতে আমরা স্বাস্থ্যবিধি পালনের উপর জোর দিয়ে যেকোন করোনার ভেরিয়েন্ট হতে রক্ষা পেতে পারি।