ওপারে আবারও গোলাগুলি এপারের বাসিন্দারা আতঙ্কে

8

বান্দরবান ও নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গতকাল শনিবার থেকে প্রচন্ড গোলাগুলি শুরু হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জামছড়ি ও দৌছড়ি ইউনিয়নে সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে একের পর এক মর্টার, আর্টিলারি বোমা বিস্ফোরণ ও প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
প্রায় ১২ দিন পর এ গোলাগুলির শব্দে সীমান্ত এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সীমান্তের কয়েকটি এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, শনিবার সকাল নয়টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে গোলাগুলির মাত্রা বেড়ে যায়। এতে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি হওয়ায় চেরারমাঠেও কিছু কিছু মেশিনগানের গুলি এসে পড়ছে।
চেরারমাঠের বাসিন্দারা জানান, তাদের বাড়ি সীমান্তের একেবারে কাছে। তাদের বাড়ির বিপরীতে সীমান্তের ওপারে বৃষ্টির মতো গোলাগুলি চলছে। কিছু গুলি পাড়ায় এসে পড়ছে। এজন্য আতঙ্কে তারা দক্ষিণ চাকধালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা বাড়ির মালামাল, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি সব ফেলে বাড়ি ছেড়েছেন। তাদের অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বলেন, সীমান্তের ৪৩ পিলার থেকে দোছড়ি ইউনিয়নের ৫০ পিলার পর্যন্ত এলাকাজুড়ে ব্যাপক গোলাগুলি চলছে। গোলাগুলির বিকট শব্দে এপারের গ্রামগুলিও কেঁপে উঠছে। সীমান্ত এলাকায় অবস্থানরত সবাই আতঙ্কিত।
তিনি বলেন, চেরারমাঠ, ফুলতলি, জামছড়িসহ কয়েকটি সীমান্তঘেঁষা পাড়ার লোকজনকে সরে থাকতে বলা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের সীমান্ত চৌকিগুলো বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) দখলে রয়েছে। এখন ওই সীমান্ত চৌকিগুলো পুনঃদখলের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। এজন্য দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলছে।
এদিকে গতকাল জামছড়ি জামে মসজিদে জোহরের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা জানান, ওপারে বিস্ফোরণের শব্দে নামাজের সময় সবার মনে ভয় কাজ করেছিল। কখন আবার মর্টারশেল মসজিদে এসে পড়ে।
দৌছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমরান জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ভারী অস্ত্রের বিস্ফোরণ শোনা গেছে। সীমান্তের কাছে না যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
বিজিবির সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের কাছে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। বিজিবি সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেন, ঘটনায় কিছু লোক সীমান্ত এলাকা থেকে পালিয়ে এসেছে। তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অস্থায়ী আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে।