ওটিটি প্ল্যাটফর্ম করের আওতায় আসবে : তথ্যমন্ত্রী

47

বিদেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মে কন্টেন্ট ও বিজ্ঞাপন প্রচারের বিষয়টিকে নিয়মনীতি ও করের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল রবিবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এক সভার শুরুতে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. নূর-উর-রহমান, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকও ওই সভায় যুক্ত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অডিও-ভিডিওসহ নানা কন্টেন্ট প্রচার বাড়ছে। সারা পৃথিবীতে এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিনোদন থেকে শুরু করে নানা কন্টেন্ট স্ট্রিমিং হচ্ছে, আমাদের দেশেও হচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি এ নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে, সেন্সরবিহীন কন্টেন্ট প্রদর্শিত হয়েছে এবং এক্ষেত্রে সরকার ঠিকভাবে ট্যাক্স পাচ্ছে না’।
মন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এসব কন্টেন্ট প্রতিটি মানুষের কাছে চলে যাচ্ছে। ফলে এসব মাধ্যম ব্যবহার করে সমাজ বিনির্মাণের যেমন সুযোগ আছে, সমাজকে ‘অস্থিতিশীল’ করারও সুযোগ থাকে। আমরা সময়ে সময়ে দেখতে পাচ্ছি এ সমস্ত মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব রটানো, সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। একইসাথে যুবা ও কিশোরদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও তৈরি হয়েছে, এটি একটি বাস্তবতা। এই মাধ্যমগুলো আমাদেরকে ব্যবহার করতে হবে ঠিকভাবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা সরকারের অনুমতি না নিয়ে এ ধরনের ব্যবসা করছে, তাদের বিষয়ে কি ব্যবস্থা এবং কেউ অনুমতি নিয়ে ব্যবসা করলেও অননুমোদিত কন্টেন্ট প্রচার করলে কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে গ্রামীণফোন এবং রবির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। গ্রামীণফোন যে উত্তর দিয়েছে সেখানে ঠিকভাবে ব্যাখ্যা নেই, আর ‘রবি’ উত্তর প্রস্তুত করছে বলে জানিয়েছে। এগুলোকে একটি সমন্বিত নিয়মনীতির মধ্যে আনার লক্ষ্যেই আমরা সভা করছি।
হাছানের ভাষ্য, ‘ওটিটি প্ল্যাটফর্ম একটি ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্র এবং এখানে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসার সুযোগ রয়েছে, যা অবশ্যই করযোগ্য। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম যেমন নেটফ্লিক্স, ইউটিউবের কাছে দেশের অনেক অর্থ চলে যাচ্ছে, কিন্তু সেখান থেকে সরকার যেভাবে ট্যাক্স পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে না’।
অন্যান্য দেশেও শুরুতে এমন অবস্থা ছিল মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন অনেক দেশে নিয়মনীতি প্রবর্তন করা হয়েছে। ভারতে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অন্য দেশের কন্টেন্ট দেখানোর ক্ষেত্রে নানা আইনকানুন, নিয়মনীতি হয়েছে। ভারতে চালু থাকার জন্য ফেসবুক ভারতীয় কোম্পানি হিসেবে রেজিস্ট্রার্ড হয়েছে। আমাদের দেশে এখনও রেজিস্ট্রার্ড হয়নি, তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ক্রমাগত প্রচেষ্টায় তারা একজন এজেন্ট নিয়োগ করেছে।
ডাক ও টেলিযোগযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ সকল বিষয়ে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালকদের দায়িত্ববোধ প্রত্যাশা করি। আমাদের দেশের আইন ও সংস্কৃতিকে সম্মান দিয়েই তাদেরকে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে’। খবর বিডিনিউজের