ওগুলো ছিল হার্টের রিং!

28

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর কাজীর দেউড়ির পার্শ্বেল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান থেকে রিকশায় করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়ার পথে চট্টেশ্বরী রোডে অভিনব কায়দায় লোপাট করা হয় ৪৫ লাখ টাকার মেডিকেল সরঞ্জাম। তবে মূল্যবান এসব সরঞ্জাম লুটে নিয়ে হজম করতে পারেনি চোরচক্র। লোপাটের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই চকবাজার থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে লুণ্ঠিত সরঞ্জামসহ মো. সুমন (৩৫) নামে চোরচক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরীর চট্টেশ্বরী মোড় থেকে সুমনকে গ্রেপ্তারের পর আটমার্সিং মোড় থেকে লুণ্ঠিত মেডিকেল সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার সুমন মাদারীপুর জেলার নয়াকান্তি বাজেদপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আক্কাস ব্যাপারির ছেলে। পুলিশের দাবি, নগরীতে ভাড়ায় রিকশা চালানোর আড়ালে চুরি-ছিনতাইয়ের সাথে তিনি জড়িত।
পুলিশ জানায়, কার্ডিয়াক কেয়ার নামে একটি মেডিকেল সরঞ্জামাদি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সহকারী মার্কেটিং অফিসার ও চট্টগ্রাম প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন কাজী মো. গোলাম মোস্তফা (৩৯)। গত ২৪ অক্টোবর নগরীর কাজীর দেউড়ির পার্শ্বেল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এসএ পরিবহনে কার্ডিয়াক কেয়ারের ঢাকা অফিস ৫৮টি প্রতিস্থাপনযোগ্য হার্টের রিংয়ের চালান পাঠায়। এসব সরঞ্জামের বাজারমূল্য ৪৫ লাখ টাকা। প্রতিস্থাপনযোগ্য রিংয়ের চালান থেকে চাহিদা অনুযায়ী নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে সরবরাহের কথা ছিল। চট্টগ্রামের প্রতিনিধি হিসেবে গোলাম মোস্তফা এস এ পরিবহনে গিয়ে দু’টি কার্টনে করে পাঠানো মেডিকেল সরঞ্জামগুলো গ্রহণ করেন। পরে তিনি পণ্যগুলো নিয়ে সিএসসিআর মেডিকেল সেন্টারে যাওয়ার জন্য একটি রিকশা ভাড়া করেন। ওই রিকশা করে চকবাজারের চট্টেশ্বরী মোড়ে এলে রিকশাচালক বলেন, তার রিকশাটি বিকল হয়ে গেছে। রিকশা থেকে নেমে গোলাম মোস্তফা আরেকটি রিকশা ধরার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। এসময় হঠাৎ করে অচেনা এক ব্যক্তি এসে জোড় করে গোলাম মোস্তফার গায়ে ধাক্কা লাগান এবং নিজের হাতে থাকা মোবাইলটি রাস্তায় ফেলে তর্কাতর্কি শুরু করেন। ইত্যবসরে রিকশাচালক সরঞ্জামভর্তি কার্টন দুটিসহ রিকশা নিয়ে সেখান থেকে উধাও হয়ে যান। পরে তিনি ওই রিকশাচালককে বিভিন্ন দিকে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান লাভে ব্যর্থ হন। পর দিন অর্থাৎ গত ২৫ অক্টোবর গোলাম মোস্তফা নিজে বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
চকবাজার থানার ওসি মনজুর কাদের মজুমদার জানান, ঘটনাস্থলসহ আশেপাশে লাগানো ২৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার মূল হোতা ওই রিকশাচালক মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতেই লোপাটের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কোতোয়ালী থানাধীন আটমার্সিং মোড়ের ফোর স্টার সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে লুষ্ঠিত পণ্যগুলো উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে পরিবহনকাজে ব্যবহৃত রিকশাটি চকবাজারের চট্টেশ্বরী মোড়ের গ্রামীণ জুয়েলার্সের সামনে থেকে জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই রিকশাচালক তার সঙ্গে আরও তিন জন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।