এ জে চৌধুরী কলেজ প্রতিষ্ঠার অতীত ও বর্তমান

251

দেশ বরেণ্য রাজনীতিবিদ সাংবাদিক চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অনেক ত্যাগী নেতার জন্মস্থান সাবেক মহকুমা পটিয়ার সবচাইতে পশ্চাদপদ ও অনগ্রসর অঞ্চল ছিলো সাবেক পশ্চিম পটিয়া এলাকা যা বর্তমানে কর্ণফুলী উপজেলা। এ অনগ্রসর এলাকার সাধারণ ঘরের গরীব দুঃখী ছেলে মেয়েদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার অভিপ্রায় ও এতদঞ্চলের দীর্ঘদিনের আশা আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের জন্য ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের প্রাক্তন সম্মানিত সদস্য,দানবীর, শিল্পপতি জনাব আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেব একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনুধাবন করে তাঁর স্বপ্ন পোষন করেন। তিনি ১৯০৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন । ক্ষণজন্মা এ মনিষী ১৯৬২ সালের প্রাদেশিক আইন পরিষদ নির্বাচনে এমপিএ নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭০ সালে সন্দীপ নিবাসী বাবু মনোরঞ্জন নাথকে অধ্যক্ষ নিয়োগ করে এ জে চেীধুরী কলেজ নির্মাণে এগিয়ে আসেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কাজ ১৯৭২ সালের ২২ এপ্রিল তাঁর মুত্যুর কারণে আর চালু হয়নি। পরবর্তীতে তাঁর একমাত্র পুত্র জনাব আব্দুল লতিফ চৌধুরীর অকাল মৃত্যুর কারণে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ আবারও বাধাগ্রস্ত হয়।
শ^শুর আবদুল জলিল চৌধুরীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এগিয়ে এলেন আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেবের একমাত্র পুত্রবধু ও মরহুম আবদুল লতিফ চৌধুরীর সহধর্মিনী জনাব আলহাজ¦ নুরুন্নাহার বেগম চৌধুরী এবং আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেবের জামাতা জনাব সুলতান আহমদ চৌধুরী বার এট ল। তাঁদের ঐকান্তিক আগ্রহ,দৃঢ মনোবল ও নিরলস কর্মতৎপরতায় ১৯৮১সালের দিকে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠিত হয়। তাঁরা সকলেই জলিল টেক্সটাইলস মিলস লি: অফিসে দীর্ঘ সভায় মিলিত হয়ে কলেজের নামকরণ করেন পশ্চিম পটিয়া এ জে চৌধুরী কলেজ। অবশেষে ১৯৮২ সালে বহু আকাক্সিক্ষত এ কলেজটি কর্ণফুলী বিধৌত বীর প্রসবিনী চট্টলার দক্ষিণ চট্টগ্রাামের প্রবেশদ্বার পিএবি সড়কের পাশের্^ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন বড়উঠান ইউনিয়ন নিবাসী মো. সোলায়মান চৌধুরী। এ কলেজের জন্য জনাব আলহাজ¦ নুরুন্নাহার বেগম চৌধুরী ও তাঁর ছেলে মেয়েদের পক্ষে তিনি ও জলিল চৌধুরী সাহেবের তিন মেয়ে সহ সর্বমোট ২.৮০ একর জায়গা দান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে জনাব ডা: হরিহর নাথ কলেজের জন্য আরো ১৮ শতক জায়গা দান করায় কলেজের মোট জায়গার পরিমান হয় ২.৯৮ একর। কলেজ প্রতিষ্ঠার সময়ে এ জে চৌধুরী স্কুলের শিক্ষক জনাব আহমদ হোসেন নিরলস পরিশ্রম করেছেন। ১৯৯১ সালে কলেজের এক ক্রান্তিলগ্নে কলেজের গভর্নিং বডির দায়িত্ব গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম-১২ এর তৎকালীন মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আলহাজ¦ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। দায়িত্ব নিয়েই তিনি প্রথম এ কলেজকে এমপিওভুক্ত করেন ১৯৯৩ সালের ০১ জুলাই থেকে। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড হতে ১-৭-১৯৮৮ থেকে এ কলেজ স্বীকৃতি লাভ করে। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় হতে ১-৭-১৯৯৮ থেকে অধিভুক্তি লাভ করে। কারিগরি শিক্ষাবোর্ড হতে ১-৭-২০০৫ থেকে বিএম শাখা অধিভুক্তি লাভ করে এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় হতে ১-৭-২০০৫ থেকে এইচএসসি প্রোগ্রাম চালু হয়। কলেজের প্রাক্তন সভাপতি মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এমপি মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় এ কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এ কলেজকে ্উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত করায় ১৯৯৮ সালে দ্বি-তল ভবন নির্মিত হয়। ২০১০ সালে এ কলেজে প্রথমবারের মত এইচএসসি কেন্দ্র স্থাপন করেন মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এমপি মহোদয়। এ কলেজের অতি আপনজন ও অভিভাবক মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এমপি মহোদয় মৃত্যুবরণ করলে তাঁর স্থলে তাঁরই সুযোগ্য পুত্র আলহাজ¦ সাইফুজ্জামান চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনিই কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনীত হন। পিতার মত পুত্র সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেই চারতলা বিশিষ্ট আইসিটি ভবনের জন্য ডিও লেটার প্রদান করেন এবং এ ভবনের নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে এ কলেজে তিনটি ভবন আছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৮০০ জন। কলেজে অনার্স কোর্স চালুর প্রচেষ্ঠা চলছে। বর্তমানে এ কলেজে শিক্ষক সংখ্যা ২৮ ও কর্মচারর সংখ্যা ১২ জন। ২০১৮ সালে নবীনবরণ ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কলেজকে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও মাননীয় ভূমিমন্ত্রী আলহাজ¦ সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি মহোদয়। ১৯৮২ সালে আব্দুল জলিল চৌধুরী পরিবার এলাকার গরীব দুঃখী মানুষের জন্য কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কিন্তু কলেজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু মহোদয় এবং তাঁরই সুযোগ্যপুত্র মাননীয় ভূমিমন্ত্রী আলহাজ¦ সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি মহোদয়ের নেতৃত্বে বর্তমান গভর্নিং বডি কলেজ উন্নয়নে ও অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।