এ.এম জহিরউদ্দিন খান(১৯৩৬-২০০৫)

42

এ.এম জহিরউদ্দিন খান, শিল্পপতি, রাজনীতিক। ১৯৩৬ সালের ৫ জুলাই চট্টগ্রামে তাঁর জন্ম। পিতা শিল্পপতি ও রাজনীতিক এ.কে খান এবং মাতা শামসুন নাহার খান। জহিরউদ্দিন খান ১৯৫৭ সালে লাহোরের আইচিসন কলেজ থেকে সিনিয়র ক্যামব্রিজ পাস করেন।
জহিরউদ্দিন খান ১৯৫৮ সালে এ কে খান গ্রæপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৯১ সাল থেকে এ.কে.খান গ্রæপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজ, বেঙ্গল ফিসারিজ লিমিটেড, কোটস (বাংলাদেশ) লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি মোবাইল ফোন কোম্পানি একটেল (টিএম ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ লিমিটেড) (১৯৯৭), ইনফোকম লিমিটেড (২০০০) এবং একেসিকম লিমিটেড (২০০২)-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।
জহিরউদ্দিন খান নিজস্ব ব্যবসায়িক পরিমন্ডলের বাইরেও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি অল পাকিস্তান টেক্সটাইল মিলস্ অ্যাসোসিয়েশনের (পূর্বাঞ্চল) চেয়ারম্যান (১৯৬৯-১৯৭১), পাকিস্তান শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য (১৯৬৩), ক্যাপাসিটি ট্যাক্স রিভিউ কমিটির সদস্য (১৯৬৯-১৯৭০), সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান (১৯৮১-৮২), ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের পরিচালক (১৯৭৬), সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের পরিচালক (১৯৭৯-৮২), ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (১৯৭৭), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান (১৯৮৩-১৯৮৫) এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন বিভাগের উপদেষ্টা কমিটির পরিচালক (১৯৭৯) ছিলেন।
জহিরউদ্দিন খান ১৯৭৫ সালের ৫ জুন জেনেভায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ওখঙ) সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হিসেবে তিনি ১৯৭৭ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। এ সম্মেলনে তাঁর ইসলামিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি গঠনের প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তিনি এই সংস্থা গঠনের লক্ষ্যে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও প্রতিষ্ঠাকর্ম সম্পাদনের জন্য গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ কমিটি কর্তৃক প্রণীত গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে ইসলামিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি গঠিত হয় (১৯৯৭)।
এ. এম জহিরউদ্দিন খান রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি চট্টগ্রাম-৬ আসনে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯১ সালে বেগম খালেদ জিয়ার মন্ত্রিপরিষদে পরিকল্পনা মন্ত্রী এবং ১৯৯৩ সালে শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
‘উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী’ প্রকল্পের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন জহিরউদ্দিন খান। চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান রয়েছে। ২০০৫ সালের ২৯ মার্চ ব্যাংককে তাঁর মৃত্যু হয়। সূত্র : বাংলাপিডিয়া