আগামী বছর অনুষ্ঠেয় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা সামনে রেখে এখন নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত স্কুলে ইতিমধ্যে এ পরীক্ষার রুটিনও দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীর যোগ্যতা যাচাই করার জন্য মূলত এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর ফলাফল সন্তোষজনক না হলে এসএসসির চ‚ড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ হয় না তাদের। তাই সঙ্গত কারণে এ পরীক্ষার ভীতি তো আছেই তার উপর এ নিয়ে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবকেরা বাড়তি টেনশনে থাকেন। পরীক্ষার ভালো ফলাফলের আশায় হাজার হাজার টাকা উড়িয়েও দেন প্রাইভেট পড়ার নামে কোচিং সেন্টারগুলোর পিছনে। অথচ স্কুল কেন্দ্রিক এই পরীক্ষার সাথে এসএসসির চ‚ড়ান্ত পরীক্ষার কোনো সংশ্লিষ্টতা বা যোগসূত্র নেই। এমনকি এর প্রাপ্ত নম্বরও যোগ হয় না চ‚ড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফলে। তারপরও এই টেস্ট পরীক্ষা শেষে এসএসসির ফরম পূরণের জন্য দোড়াদৌড়ি শুরু হয় স্কুলে স্কুলে। ফি বছর এ ধরণের হয়রানির দৃশ্য চোখে পড়ে। তাই স্বভাবত এখানে একটি প্রশ্ন জাগে এ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এত দোড়াদৌড়ি কিংবা আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন কোথায়। দশ বছরের দীর্ঘ স্কুল জীবন পাড়ি দিয়ে আসা একজন শিক্ষার্থী যথারীতি এসএসসির মতো বড় একটি পাবলিক পরীক্ষায় স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে অংশ নিবে- এটাই তো স্বাভাবিক। একজন শিক্ষার্থীর এটা লালিত একটি স্বপ্নও। এ নিয়ে অনেক আশা-ভরসাও থাকে খোদ অভিভাবকদেরও। নিছক এখানে টেস্ট পরীক্ষার কারণে কোনো শিক্ষার্থী চ‚ড়ান্ত পরীক্ষা হতে ছিটকে কিংবা বাদ পড়বে এটা শুধু অনাকাক্সিক্ষত নয় দুঃখজনকও বটে। এমন আচরণ মেনে নিতেও কষ্ট হয় একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে। ফলে এতে নিরুৎসাহিত হয়ে অনেকে শেষ পর্যন্ত লেখাপড়া ছেড়ে দেয় কিংবা শিক্ষা হতে ঝরে পড়ে। কারণ টেস্টের পরিণতি চ‚ড়ান্ত পরীক্ষার ক্ষেত্রেও যা ঘটবে- এমনটা ভাববার অবকাশ আছে বলে মনে করি না। তাই এ ক্ষেত্রে দুর্বল শিক্ষার্থীদের বাছাই পূর্বক প্রয়োজনে বিশেষ ক্লাস নিয়ে তাদেরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে চ‚ড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া উচিত বলে মনে করি। বলা বাহুল্য যে বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমছে ক্রমান্বয়ে। এসএসসিতেও অনুপস্থিতির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। অটো প্রমোশন দিয়ে পরিস্থিতি সামলাইতে হয়েছে। তাই এমনিতর পরিস্থিতি বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ের লেখাপড়ার ঘাটতির কথা মাথায় রেখে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা দরকার বলে মনে করি।
বজল আহমদ
প্রচার সম্পাদক- এনায়েত বাজার ওয়ার্ড আ. লীগ