এসএসসি নভেম্বরে এইচএসসি ডিসেম্বরে

6

পূর্বদেশ ডেস্ক

আগামী ১৪ নভেম্বর এসএসসি ও ২ ডিসেম্বর এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করে রুটিন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৪ নভেম্বর এসএসসি ও ২ ডিসেম্বর এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ ধরেই রুটিন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব খালেদা আক্তার স্বাক্ষরিত এই সময় সূচি প্রকাশ করা হয়।
গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পরীক্ষা দুটির চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করা হয়, যার অপেক্ষায় ছিল প্রায় ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী। এর আগে ১৪ নভেম্বর থেকে এসএসসি সমমানের দাখিল পরীক্ষা শুরুর সময়সূচি প্রকাশ করেছিল মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।
দেশে গত কয়েক বছর ধরে ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হয়ে আসছিল। কিন্তু গত বছরের মার্চে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।
তার আগে ২০২০ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও এইচএসসি পরীক্ষা আটকে যায়। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা নিতে না পারায় জেএসসি ও এসএসসির ফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয় এ বছর জানুয়ারিতে।
মহামারির কারণে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও সময়মত নেওয়া যায়নি। কয়েক দফা চেষ্টার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশের সব স্কুল-কলেজ খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের দেড় বছর পর ক্লাসে ফেরানো সম্ভব হয়।
এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসএসসি ও এইচএসসিতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কেবল নৈর্বচনিক বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বাংলা, ইংরেজির মত আবশ্যিক বিষয়গুলোতে পরীক্ষা না নিয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেছিলেন, এসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি এবং এইসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর দেয়া হবে। এসব বিষয়ে কোনো অ্যসাইনমেন্ট নেওয়া হচ্ছে না। তাতে এসএসসিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তিনটি এবং এইচএসসিতে ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষায় বসতে হবে।
১৪ নভেম্বর সকালে বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরদিন ১৫ নভেম্বর সকালে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, বিকালে হিসাব বিজ্ঞান পরীক্ষা হবে।
১৬ নভেম্বর সকালে রসায়ন (তত্ত্বীয়), ১৮ নভেম্বর সকালে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়), ২১ নভেম্বর সকালে ভূগোল ও পরিবেশ এবং বিকালে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষা হবে।
এরপর ২২ নভেম্বর সকালে উচ্চতর গণিত ও জীববিজ্ঞান, ২৩ নভেম্বর সকালে পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অর্থনীতি এবং বিকালে ব্যবসায়িক উদ্যোগ বিষয়ের পরীক্ষা হবে।
পরীক্ষা শুরুর তিনদিন আগে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ২ ডিসেম্বর সকালে পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে। শেষ হবে ৩০ ডিসেম্বর সকালে সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র, সমাজকর্ম দ্বিতীয় পত্র এবং বিকালে ক্রীড়া দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার মাধ্যমে।
জানা গেছে, করোনার কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময় থাকবে দেড় ঘণ্টা। এক্ষেত্রে এমসিকিউ ও সিকিউর মাঝে কোনো বিরতি থাকবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১১ নির্দেশনা : ১. করোনা মহামারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২. পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। ৩. প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত¡ীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৪. পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এমসিকিউ ও সিকিউ অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর শিট বিতরণ, সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ। বেলা ২টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে ১টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর শিট বিতরণ। বেলা ২টায় বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ। আর বেলা ২টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনী (ওএমআর শিট) উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ। ৫. পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করবে। ৬. প্রত্যেক পরীক্ষার্থী সরবরাহ করা উত্তরপত্রে পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই মার্জিনের মধ্যে লেখা কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না। ৭. ব্যবহারিক বিষয়ে তত্ত্বীয়, বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক খাতার (নোটবুক) অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে। প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ পরীক্ষার্থীর ব্যবহারিক খাতার নম্বর দিয়ে নম্বরগুলো ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক খাতার নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে পাঠাবে। ৮. প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্রে উল্লেখ করা বিষয়গুলোর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ৯. কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিজ কলেজ বা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না, পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে। ১০. পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।
১১. পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিচার ফোন (স্মার্টফোন ছাড়া) ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া পরীক্ষার হলে অন্য কেউ ফোন ব্যবহার করতে পারবে না।