এসএসসি-এইচএসসির শিক্ষার্থীদের সিলেবাস অধাংশ করা সময় উপযোগী

32

বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর কারণে দীর্ঘদিন হতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। কোভিড-১৯ তথা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্খায় এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরীক্ষার্থীদের অটোপাস দিয়েছে। পরীক্ষা বিহীন পাস বিষয়ে শিক্ষা চিন্তকরা নানা ভাবে মূল্যায়ন করেছে বিষয়টিকে। স্বাভাবিক ভাবে পরীক্ষাবিহীন পাসের অধিকারীদের পাসের মান প্রশ্ন বিদ্ধ। বিগত মার্চ ২০২০ হতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এসএসসি, এইচএসসি ২০২১ সহ দেশের সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। এমতাবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তা অপুরণীয়। সরকার অনলাইন ক্লাস নেয়ার নির্দেশ দিয়ে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের।
দেশ ব্যাপী শিক্ষক সমাজ অনলাইনে ক্লাব নিয়েছেন। সরকার নির্দেশিত অনলাইন ক্লাসে শতকরা দশ পার্সেন শিক্ষার্থীও উপকৃত হয়নি। সে উদ্যোগ মূলত মাঠেই মারা গেছে। যদিও শিক্ষকরা অনলাইন ক্লাস বর্তমানেও করে যাচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এসকল ক্লাস বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে না। মোদ্দা কথা ২০২০ সালের মার্চ হতে ২০২১ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত দেশের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রম হতে বিচ্ছিন্ন বলা যায়। এমতাবস্থায় সামনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময় চলে আসছে। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসংকট জনিত মুহূর্তে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যেহেতু এখনো ক্লাসের বাইরে রয়েছে, সেহেতু তাদের নিকট হতে পরীক্ষা নিতে হলে পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার সম্ভব নয়। অটোপাসে যেমন মেধার মূল্যায়ণে ঘাটতি স্বাভাবিক তেমনি সিলেবাস কমিয়ে পরীক্ষা নিয়ে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জানার এবং শেখার জগতকে অর্ধেকে নামিয়ে আনার সামিল। তবে একেবারে পরীক্ষা না নেয়ার চেয়ে অর্ধেক সিলেবাসের উপর পরীক্ষা নেয়া মন্দের ভালো বৈকি!
এমনিতেই বর্তমানে দেশের শিক্ষার মান খুবই নি¤œমুখী। তার উপর অর্ধেক সিলেবাস তড়িগড়ি করে পড়িয়ে শিক্ষার্থীদের নিকট হতে পরীক্ষা নিয়ে পাসের ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মান আরো নি¤œমুখীতায়। পর্যবশিত হবে সন্দেহ নেইÑ এমন মত শিক্ষা চিন্তকদের। আমরা চাই যে ভাবে দেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকাÐ চলছে সেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা জরুরি। সুশিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি অগ্রগতির মহাসড়কে হাটতে পারে না। সরকারের উচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে একাডেমির কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্তব্য। সিলেবাস অর্ধেকের নামিয়ে আনা হলেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার সুযোগ সৃষ্টি না করা হলে এ উদ্যোগও ব্যর্থ হতে বাধ্য। আমরা আশা করনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার একটি সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক সিলেবাস শেস করে পরীক্ষার মুখোমুখি হবার সুযোগ করে দেয়া।