এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে জট খুলেছে

102

জমি অধিগ্রহণের জন্য অপেক্ষা, ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়া, বন্দরের আপত্তি, নকশা পরিবর্তন, পিডিবি’র গড়িমসি, বৃষ্টিসহ নানা কারণে বিলম্বিত হচ্ছিল এলিভেটেড এক্সেপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। তবে সব জটিলতার নিরসন হয়ে এগিয়ে চলছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। একই সাথে প্রকল্পটিতে প্রতিটি জংশনকে সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে।
মূল শহর থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রাপথের দূরত্ব কমাতে সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র‌্যাঙ্কিনকে। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রূয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের পিলার পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পের কাজ শুরুর কয়েকমাসের মাথায় নিরাপত্তা এবং পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির আশঙ্কায় আপত্তি তোলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সিডিএকে কাজ বন্ধ রাখার জন্য চিঠিও দেয়া হয়। এরপর আপত্তি তোলে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এসব বিপত্তি শেষ না হতেই পিডিবির খুঁটি সরাতে গড়িমসি, বৃষ্টিসহ নানা প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নে। তাছাড়া প্রকল্পের শুরু থেকেই আপত্তি ছিল নগর পরিকল্পনাবিদদের। সিডিএ বলছে, এসব বিপত্তি নিষ্পত্তি হয়ে এগিয়ে চলছে প্রকল্পের কাজ। ২০২৩ সালে প্রকল্পটি দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে।
সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সমস্ত জটিলতা শেষ হয়েছে। বন্দরের সাথে যে জঠিলতা ছিল সেটার সমাধান আগেই হয়েছে। কিছু অংশ বন্দরের পাশ দিয়ে এবং কিছু অংশ রাস্তার মাঝ দিয়ে যাবে। ট্রাফিক বিভাগের সাথে সমন্বয় হয়েছে। পিডিবিকে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তাদের সাথে কথা হয়েছে, তারা পিলার সরিয়ে নিবে। আমরা আশা করছি ২০২৩ সালে প্রকল্পটি দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে। চারটি ভাগে প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। প্রতিটি ভাগের কাজ চলমান আছে। বেশি মানুষের ব্যবহার উপযোগী করতে আমরা সবগুলো জংশনকে এক্সপ্রেসওয়েতে সংযোগ স্থাপন করবো। এজন্য ৯টি স্থানে উঠা-নামার ব্যবস্থা থাকবে।
সূত্রমতে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটির র‌্যাম্প ও লুপসহ মোট দৈর্ঘ্য হবে ২০ কিলোমিটার। চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রশস্ততা হবে ৫৪ ফুট। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৯টি এলাকায় ২৪টি র‌্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার পথ) থাকবে। নগরীর টাইগারপাসে চারটি, আগ্রাবাদে চারটি, বারিক বিল্ডিং মোড়ে দুটি, নিমতলী মোড়ে দুটি, কাস্টমস মোড়ে দুটি, সিইপিজেডে চারটি, কর্ণফুলী ইপিজেডে দুটি, কাঠগড়ে দুটি, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় দুটি র‌্যাম্প থাকবে। চারধাপে প্রকল্পের কাজ হওয়ার কথা। এরমধ্যে লালখান বাজার থেকে বারিক বিল্ডিং, বারিকবিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা ক্রসিং, সল্টগোলা থেকে সিমেন্টক্রসিং, সিমেন্টক্রসিং থেকে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে কাজ হওয়ার কথা। বাস্তবায়ন সংস্থা শেষ ধাপ থেকে শুরু করে বর্তমানে চারটি ধাপেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। চারটি ধাপের কাজ একসাথে চলমান আছে। আশা করছি, ২০২৩ সাল থেকে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে।