এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ শুরু

120

লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্পের টেস্ট ফাইলিংসহ আনুষাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। প্রাথমিক কাজ শেষ হলে মূল কাজে হাত দেওয়া হবে। প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হতে আরো দু-চার মাস সময় লাগতে পারে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম নগরী যেমন যানজটমুক্ত হবে তেমনি বিনিয়োগবান্ধব হিসেবেও স্বীকৃতি পাবে। জাতীয় অর্থনীতিতে এ প্রকল্প রাখবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রথমদিকে নগরীর মুরাদপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলো সিডিএ। পরবর্তীতে প্রকল্পের ডিজাইন পরিবর্তন করে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার প্রকল্পের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা হয়। প্রকল্পটি ইতিমধ্যে একনেকের অনুমোদনও পেয়েছে।
এরপর ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র আহবান করা হলে ১০টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। এরমধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে যোগ্য বিবেচনা করা হয়। যোগ্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা ম্যাক্স র‌্যানকিন জেভিকে ইতিমধ্যে প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। ম্যাক্স র‌্যানকিন জেভি ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ১১৩ টাকা দর উল্লেখ করেছিল। পৃথক বøকে বিভক্ত করে প্রকল্পের নির্মাণকাজ করা হবে। প্রথম দফায় কাজ করা হবে সল্টগোলা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত। ইতিমধ্যে ওই এলাকায় কয়েকটি স্থানে টেস্ট ফাইলিং কাজ শুরু হয়েছে। সড়কের মাঝে টিনের ঘেরাও করে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছি। নগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে পুরো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হবে একাধিক বøকে ভাগ করে। প্রকল্পটি মূলত নেয়া হয়েছে যানজটমুক্ত নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে। শুধু যানজটের কারণে চট্টগ্রামে বিদেশি বিনিয়োগ দিনদিন কমছে। বিদেশি ব্যবসায়ীরা বিমানবন্দর থেকে শহরে আসতে ২ থেকে তিন ঘণ্টা বা আরও অধিক সময় যানজটে আটকা পড়েন। এতে তারা চট্টগ্রামে বিনিয়োগে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছে দিনদিন। এ সমস্যার সমাধানে আমরা প্রকল্পটির উপর বেশি জোর দিচ্ছি।
উল্লেখ্য, নগরীর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কে দীর্ঘস্থায়ী যানজট নিত্য ঘটনা। বিশেষ করে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) আশপাশের এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের। নিত্য ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসী ও পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের। যানজটে পড়ে বিদেশি যাত্রীদেরও বিমানবন্দর থেকে মূল শহরে হেঁটে আসার ঘটনা আছে। এছাড়া বিমানের যাত্রীদের যাত্রা বাতিল হওয়ার ঘটনাও অহরহ। নিত্য যানজটের দুর্ভোগ থেকে জনগণকে মুক্তি দিতেই মূলত সিডিএ লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকল্পের অবকাটামো নির্মাণকাজ শুরু করা হচ্ছে।
গত ২০১৭ সালের অক্টোবর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। সময় নির্ধারণ করা হয়েছে জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত।
সিডিএ’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছি। এখন চলছে টেস্ট ফাইলিং। টেস্ট ফাইলিং শেষে পরবর্তী কাজে হাত দেয়া হবে। এজন্য কিছুদিন সময় লাগবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলাকালীন অবস্থায় নগরবাসীর দুর্ভোগ যাতে না বাড়ে সেজন্য একাধিক ব্লকে ভাগ করে কাজ করা হবে। পাশাপাশি যানবাহন ও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য বিকল্প সড়ক হিসেবে আউটার রিং রোডটিও খুলে দেয়া হবে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আউটার রিং রোড খুলে দেওয়া হবে।