এলইডি বাতিতে আলোকিত হবে নগরীর মূল সড়ক

87

নগরীর সবকটি মূল সড়কে লাগানো হবে এলইডি বাতি। এসব বাতির আলোয় আলোকিত হবে নগরী। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক এবং পথচারীদের জন্য কার্যকর ও টেকসই সড়কবাতির সুবিধা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) একটি প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উঠছে ২৬১ টাকার এ প্রকল্প। প্রকল্প ব্যয়ের ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ আসবে ভারতীয় ঋণ থেকে এবং অবশিষ্ট ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ আসবে জিওবি থেকে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরীর মূল সড়কে আর কোন পুরনো বাতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন চসিকের প্রধার প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তবনা (ডিপিপি) সূত্রে জানা গেছে, ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকার সড়ক আলোকায়ন ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন কাজ’ শীর্ষক এ প্রকল্পের আওতায় ৪০, ৬০, ৯০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি এবং ২০ হাজার ২৬৭টি জিআই পোল বসানো হবে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬০ কোটি ৮৯ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা (প্রায় ২৬১ কোটি) টাকা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের গৃহীত এ প্রকল্পের আওতায় ৪১ ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কজুড়ে এলইডি লাইট লাগানো হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও সরকারের নিজস্ব অর্থ দিয়ে। যার মধ্যে ভারত সরকার ঋণ দিচ্ছে ২১৪ কোটি ৪৬ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা এবং জিওবি থেকে ৪৬ কোটি ৪৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকা।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার এলইডি লাইটের প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি’র আওতায় শহরের প্রতিটি মূল সড়কে এলইডি বাতি বসানো হবে। তবে ওখান থেকে কিছু পুরনো বাতি শহরের বিভিন্ন গলি ও নতুন আবাসিকে লাগানো হবে।
চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ বলেন, প্রকল্প অনুমোদন পেলে ২০ হাজার লাইট দিয়ে শহরকে আলোকায়নের আওতায় আনা যাবে। ইতোমধ্যে রাজস্ব খাত ও মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ৭০ কিলোমিটার প্রধান সড়ক আলোকায়নের আওতায় এসেছে। নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আর কোন মূল সড়ক বাকি থাকবে না।
তিনি আরও জানান, চসিক এলাকায় সড়কসমূহের বৈচিত্র্যতার কারণে সব সড়কে আলোর স্তর নিম্নতর। বেশিরভাগ সড়কে প্রায় ৪৮ হাজার ৫৫৭টি টিউব ও এনার্জি বাতি স্থাপিত আছে এবং প্রধান প্রধান সড়ক ও মোড়সমূহে প্রায় ৪ হাজার ৯৮৬টি হাইপ্রেসার সোডিয়াম এবং মেটাল হ্যালাইড বাতি স্থাপিত আছে। বর্তমানে স্থাপিত সড়কবাতির আলোর সুবিধা আধুনিক এলইডি বাতির আলোর তুলনায় পুরনো এবং অপর্যাপ্ত। বিদ্যমান বাতিসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও বেশি।
বর্তমানে ৪০ ওয়াট টিউব বাতি (ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প), ৬৫ ওয়াট এনার্জি বাতি (সিএফএল), ১৫০ ওয়াট হাইপ্রেসার সোডিয়াম, ৪০০ ওয়াট মেটাল হ্যালাইড বাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলোতে বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ অপচয় হয় এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডও বৃদ্ধি করে। যা শহরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রফিক এবং পথচারীদের জন্য কার্যকর ও টেকসই সড়কবাতির আলোক সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে। রাত্রিকালীন শহরের সৌন্দর্য, ব্যবসায়িক সুবিধা, সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। একইসাথে কম কার্বন নির্গমন এবং শক্তি শোষণ সম্পর্কিত পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রাফিক ও পথচারীর জন্য স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে সড়কবাতির আলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।