এমপিদের কথা শুনবে না কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ

187

মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে ভোটগ্রহণের কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী জানুয়ারী থেকেই নিয়মিত ইউপি নির্বাচন করার সব ধরনের আয়োজন চলছে। এক্ষেত্রে বিএনপি এখনো নীরব থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সক্রিয়। এবার ইউপি নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিলেও তা কেন্দ্রে কার্যকর করতে পারবে না। ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের পাঠানো প্যানেল তালিকা ধরেই প্রার্থী চূড়ান্ত করবে কেন্দ্র। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফরম বিক্রি করা শুরু হলেও প্যানেল তালিকার বাইরে কেউ ফরমও কিনতে পারবে না। এমপিদের যে কোনো ধরনের সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন কিভাবে হবে, কিভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার একটা সুনির্দিষ্ট রূপরেখা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে আছে। সেভাবেই ফরম বিক্রি চলছে। সুতরাং ইউপি নির্বাচনে চাইলেও যে কেউ ফরম কিনতে পারবে না। তবে উপজেলা নির্বাচনের ক্ষেত্রে মনোনয়ন কেনার সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। সাংগঠনিক চেইন অব কমান্ড রক্ষায় এবার কিছু নির্দেশনার কথা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সংসদ সদস্যরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর বিষয়ে সুপারিশ করতেই পারেন। তারা সুপারিশটা করবেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাছে। সেটা ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ হয়ে কেন্দ্রে আসতে পারে। সে প্যানেল তালিকায় যাদের নাম থাকবে তারাই ফরম সংগ্রহ করতে পারবে। সেখান থেকে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে। কারো ইচ্ছেয় মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ নেই।
এদিকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, আগামী ২০ অক্টোবর চট্টগ্রামের আট উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সন্দ্বীপের হারামিয়া ইউনিয়ন, ফটিকছড়ির নানুপুর ইউনিয়ন, মিরসরাই মিঠানালা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও রাঙ্গুনিয়ায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব ইউনিয়নে প্রার্থী বাছাইয়েও তৃণমূলের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেয়ার কথা বলেছে জেলা আওয়ামী লীগ।
দলীয় সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ার পর থেকেই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগ্রহীদের ফরম বিক্রি করছে দলটি। এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকার বাইরে ফরম কেনার সুযোগ থাকছে না। স্থানীয় সংসদ সদস্যরা পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ডিও দিলেও তা আমলে নিবে না কেন্দ্র। ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তফসিল ঘোষিত প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে একজন করে প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে হবে। এক্ষেত্রে একাধিক প্রার্থী থাকলে সর্বোচ্চ তিনজনের নাম কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব করা যাবে। এ প্যানেল তালিকায় অবশ্যই ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সুপারিশ থাকতে হবে। পরে এ তালিকা ধরে কেন্দ্র যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, ‘আগামী ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা তৃণমূলের বর্ধিত সভা ডেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করে পাঠাতে বলেছি। সেখান থেকে যে নামগুলো আসবে সেগুলোই আমরা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিব। ইতোমধ্যে কেন্দ্র একটি নির্দেশনা আমাদেরকে দিয়েছে। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে কোন প্রক্রিয়ায় প্রস্তাব পাঠাতে হবে। উত্তর জেলায় তৃণমূলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারো তদবির চলবে না। কেউ যদি মনে করে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীকে উপেক্ষা করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিবে তাহলে সে বিষয়টি দেখবে কেন্দ্র। সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমরা কেন্দ্রের দেয়া নির্দেশনা অনুসরণ করবো।’