এবার নতুন নোট বিক্রিতেও মন্দা

21

চলছে লকডাউন। কড়াকড়ি আছে নানা ক্ষেত্রে। আর ক’টা দিন পরেই ঈদ। এ সময় নতুন নোটের জন্য থাকে বেশ তাড়াহুড়ো। গতবারের মতো এবারও নতুন নোটের বাজার মন্দা। নতুন নোট সরবরাহে কোন ব্যবস্থা নেই বাংলাদেশ ব্যাংকে। করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই কিন্তু এ ব্যবস্থা। তাই সর্বসাধারণের মাঝে এবার নতুন নোটের জন্য তেমন উচ্ছ্বাস নেই। নেই তেমন আগ্রহও। বেঁচে থাকার লড়াই যেখানে নিরন্তর সেখানে আবার নতুন নোট সংগ্রহ। এভাবেই নিজেদের অনাগ্রহ ও অসামর্থের কথা বলে ফেললেন মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। অবশ্য তবুও নিউ মার্কেট, কোর্ট বিল্ডিং, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন ব্যস্ততম এলাকায় নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন নোট কারবারিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিভিন্নভাবে নতুন নোটের কারবারিদের সংগ্রহ করা টাকা মিলছে নগরীর এসব এলাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রোজা ও ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটায় গ্রাহকদের বাড়তি চাহিদার কথা বিবেচনায় এবার নতুন-পুরনো ৩৫ হাজার কোটি টাকার নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে ছোট-বড় মূল্যমানের নতুন নোট রয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। লকডাউন শুরুর আগে থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই টাকা বাজারে ছাড়া শুরু করে। যারা ব্যাংকের গ্রাহক, তারা লেনদেনের সময় নতুন টাকা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া এটিএম বুথেও মিলছে নতুন টাকা। তবে আগের মতো সবার মাঝে নতুন ও খুচরা টাকা বিনিময় করা হচ্ছে না।
নতুন নোটের কারবারিরা জানান, তারা ১০০ টাকা, ৫০ টাকা, ২০ টাকা, ১০ টাকার নতুন নোট পেয়েছেন। পাশাপাশি পেয়েছেন ২০০ টাকার স্মারক ব্যাংক নোট।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, শতভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং ইউভি কিউরিং ভার্নিশযুক্ত ২০০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোটটি অন্যান্য ব্যাংক নোটের ন্যায় দৈনন্দিন লেনদেনে ব্যবহার করা যাবে। ঈদ সালামিতে নতুন টাকা পেতে পছন্দ করে ছোট-বড় সবাই। এর পাশাপাশি বখশিস, ফিতরা কিংবা দান-খয়রাতেও অনেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করে। আবার ঈদের আগের মাসের বেতন ও বোনাসের টাকা নতুন নোটে পাওয়ার আশা করেন চাকরিজীবীরা। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে বাড়তি কেনাকাটায় বাজারে নগদ টাকার চাহিদা বাড়ে।
নিউমার্কেটের (বিপণি বিতান) ফটক, জিপিও, কোতোয়ালী মোড়, আদালত ভবনের ফটক, জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে ছেঁড়া নোটের হাট বসলেও দেখা নেই ক্রেতার। ছোট ছোট টুল, কালো ব্যাগ নিয়ে বসেছেন নতুন নোটের কারবারিরা।
নতুন নোটের হাটে ৫ টাকার একশটি নতুন নোট বিক্রি হয় ৬৫০-৭০০ টাকা পর্যন্ত। ১০ টাকার নোট একশটি ১০ হাজার ১০০-২০০ টাকা, ২০ টাকার নোট একশটি ২ হাজার ১৫০-২০০ টাকা, ৫০ ও ১০০ টাকার বান্ডিলে বাড়তি দিতে হয় ২৫০-৩০০ টাকা।
দীর্ঘদিন ধরে নতুন নোটের ব্যবসার সাথে জড়িত মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, এবার সকল ক্ষেত্রের মতো নতুন নোট বিক্রিতেও মন্দা চলছে। ছোট নোটের চাহিদা বেশি। কিন্তু সরবরাহ কম। তাই দাম বেশি। এবার দুই টাকা-পাঁচ টাকার নতুন নোট নেই বললেই চলে।
তিনি আরো জানান, সবমিলে এবার করোনা সংক্রমণের কারণে মানুষের আর্থিক সক্ষমতার কারণেও অনেকে নতুন নোট সংগ্রহের চিন্তা বাদ দিয়েছেন।