নিজস্ব প্রতিবেদক
পরীর পাহাড় ইস্যুতে আইনজীবী সমিতি ও জেলা প্রশাসন দু‘পক্ষই বেশ তৎপর। আইনজীবী সমিতি গতকাল বৃহস্পতিবার সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক মিলে ২১ জনের সাথে বলেছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করণীয় নির্ধারণ হয়েছে। আর জেলা প্রশাসক এরই মধ্যে কথা বলেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দীর্ঘকালীন সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সাথে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, আইনজীবী সমিতির ভবনগুলো অনুমোদনের খুঁিটনাটি সম্পর্কে জানা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট লাগোয়া আইনজীবী ভবনের যৌক্তিকতা নিয়ে এরই মধ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব একটি টিম। আর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বদিউল আলমের নেতৃত্বে আরেকটি টিম কাজ করছে ‘সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা’ সংক্রান্তে প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য। সবমিলে দু‘পক্ষই বেশ তৎপর।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোমিনুর রহমান জানান, পরীর পাহাড়ে সিডিএ’র অনুমোদন দেয়া ভবনগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ায় নির্মাণ করা হয়েছে কিনা তা নিয়ে কাজ করছে সিডিএ। আর ভল্টের নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশংকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি টিম। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তরফেও টিম কাজ করছে।
এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সিডিএ’র অনুমোদনকৃত ভবন নির্মাণে নকশায় পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা এবং কি পদ্ধতিতে এসব ভবনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে তা জানতে সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সাথে এরই মধ্যে কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোমিনুর রহমান।
এদিকে আইনজীবী সমিতি সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকদের সাথে বৈঠক করে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর আইনজীবী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান সমিতির সভাপতি এডভোকেট এনামুল হক। গতকালের সভায় সভাপতিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বার কাউন্সিলের বর্তমান মেম্বার এডভোকেট মুজিবুল হক চৌধুরী, মাহবুব উদ্দিন, ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী, বদরুল আনোয়ার, দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন চৌধুরী, সালেহ উদ্দিন হায়দার সিদ্দিকী, মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন দাশ ও রতন কুমার রায়। সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জিয়া উদ্দিন, আইয়ুব খান, মুজিবুর রহমান ফারুক, অশোক দাশ, আবদুর রশিদ, নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, জাহেদ বীরু, মাহবুবুল আলম ও আবু মোহাম্মদ হাশেম।
পরীর পাহাড় তথা আদালত ভবনের বয়স ১৩০ বছর। আর আইনজীবী সমিতির বয়স ১২৫ বছর। এ পরীর পাহাড় নিয়ে আইনজীবী সমিতি ও জেলা প্রশাসনের তরজা চলছেই। এ পাহাড়ে আইনজীবী সমিতির যেমন ভবন আছে তেমনি জেলা প্রশাসনের তরফে লিজ দেয়া দোকানপাটও আছে। সর্বশেষ তথ্যমতে, পরীর পাহাড় রক্ষায় অননুমোদিত বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদের প্রস্তাবনায় অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা চাউর হওয়ার পর আইনজীবী সমিতিও নড়েচড়ে বসেছে।
এ অবস্থায় পরীর পাহাড়ের সার্বিক অবস্থা দেখতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস চট্টগ্রাম আসছেন ২৩ সেপ্টেম্বর। থাকবেন ৬দিন।
১৩০ বছরের ঐতিহ্যসমৃদ্ধ পরীর পাহাড়ে আইনজীবীদের জন্য দু’টি নতুন ভবন নির্মাণ করা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে যায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরীর পাহাড় রক্ষায় গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর আইনজীবী সমিতি সাধারণ সভা করে। দু’পক্ষের দ্ব›েদ্বর মধ্যেই চট্টগ্রাম ওয়াসা, বিদ্যুৎ বিভাগ ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সহ ১৪টি সেবা সংস্থার কাছে চিঠি দেয় জেলা প্রশাসন।