এখনো চালু হয়নি ১২ কোটি টাকায় নির্মিত ট্রমা সেন্টারটি

19

হাটহাজারী প্রতিনিধি

আজ রোবাবর ‘বিশ্ব ট্রমা দিবস’। সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টির জন্য এ দিবসটি পালন করা হয়। পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা, সহিংসতা ও নির্যাতনে শারীরিক ও মানসিক আঘাত পাওয়া মানুষের চিকিৎসা ও সেবা নিশ্চিতে চলতি বছরের ৪ এ্রপ্রিল চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ট্রমা সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়েছে।
এর আগে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি দুই পার্বত্য জেলার মহাসড়কের মধ্যবর্তী এলাকা হাটহাজারী পৌরসভা কাচারী সড়কে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণ করা হয়। অথচ হাসপাতালের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়নি নিদিষ্ট সংখ্যক জনবল। নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। তাইতো উদ্বোধনের অর্ধ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত চালু করা যায়নি ২০ শয্যার বিশেষায়িত এই হাসপাতাল। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ জনগণ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর বাস্তবায়নকৃত তিন তলার হাসপাতাল (ট্রমা সেন্টার) ভবনে আছে ২০টি শয্যা। তার মধ্যে বিশেষ কেবিন ২টি, সাধারণ শয্যা ১৮টি। হাসপাতাল ভবনে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ থাকলেও সরবরাহ করা হয়নি আসবাবপত্র। ট্রমা সেন্টারের জন্য চিকিৎসক, নার্স এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদসৃজন তথা জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উদ্বোধনের পরও হাসপাতালটির কার্যক্রম চালু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হাটহাজারী পৌরসভার আলমপুর গ্রামের মো. আবুল বশর বলেন, বছর খানের আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাত পেয়ে আমার ডান পা ভেঙ্গে গেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পায়ে দু’বার অপারেশন (অস্ত্রপাচার) করেছি। এরপরও আমার পা ভালো হয়নি। আমার মতো গরিব লোকের পক্ষে এত টাকা খরচ করা সম্ভব হচ্ছে না। যদি এ ট্রমা সেন্টার চালু থাকতো তাহলে আমাকে অনেক টাকা খরচ করে, গাড়ি ভাড়া দিয়ে কষ্ট করে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হতো না।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন বলেন, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি দুই পার্বত্য জেলার মহাসড়ক দুইটি দিয়ে যাতায়াত করেন বিপুলসংখ্যক পর্যটক। এ কারণে মহাসড়ক দুইটিতে প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের সময়মতো চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের উদ্যোগে দুই মহাসড়কের মধ্যবর্তী এলাকা হাটহাজারী পৌর সদরে ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে নির্ধারিত জনবল ও যন্ত্রপাতি না থাকায় হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।
কবে নাগাদ ট্রমা সেন্টারটি চালু হবে; এ ব্যাপারে নবাগত চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মারফত খতিয়ে দেখছি এবং অচিরেই হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালুর জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।