এক লাখ প্রি-পেইড মিটারে ‘সাশ্রয়’ ৫৮ কোটি টাকার গ্যাস

37

ওয়াসিম আহমেদ

গ্যাসে প্রি-পেইড মিটার বসানোতে গ্রাহক ও বিতরণ সংস্থা উভয়ের জন্য সুবিধাজনক বলে স্বীকৃত। একেতো গ্রাহকের খরচ কমছে অন্যদিকে সাশ্রয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকার গ্যাস। ইতোমধ্যে ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দিয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল)। তারই ধারায় ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও এক লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দিবে সংস্থাটি। এতে সাশ্রয় হবে ৫৮ কোটি ৩২ লাখ টাকার গ্যাস। যা দিয়ে আরও ৫৪ হাজার গ্রাহককে গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব বলে ধারণা প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের।
কেজিডিসিএলের জনসংযোগ ও সমন্বয় বিভাগের তথ্য মতে, সংস্থাটির বর্তমান গ্রাহক প্রায় ছয় লাখ। এর মধ্যে ৬০ হাজার গ্রাহক প্রি-পেইড মিটারের আওতায়। আগামী বছরের মধ্যে আরও এক লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনতে ইন্সটলেশন অব প্রি-পেইড গ্যাস মিটার ফর কেজিডিসিএল পার্ট-৩ নামের নতুন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। তিন বছর আগে ২০১৯ সালে নেওয়া ২৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার প্রকল্পটি পরিবর্ধন, পরিমার্জন হয়ে ২০২১ সালের মাঝামাঝি ২৪১ কোটি টাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি দেওয়ার পর অনুমোদন দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। প্রকল্পটির দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পথে। ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ হলে মোট গ্রাহকের ২৬ শতাংশ প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আসবে।
প্রকল্পটিতে প্রস্তাবিত তথ্য মতে, পোস্টপেইড গ্রাহকরা প্রতি দুই চুলার মিটারে মাসে গড়ে ৭৭ মিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। বিপরীতে প্রি-পেইড মিটার গ্রাহকরা মাসে গড়ে ৪০ থেকে ৪৮ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করছেন। এতে মিটারপ্রতি মাসে সাশ্রয় হচ্ছে ২৭-২৮ ঘনমিটার গ্যাস। অর্থাৎ এক লাখ প্রি-পেইড মিটারে বছরে সাশ্রয় হবে ৩ কোটি ২৪ লাখ ঘনমিটার গ্যাস। যার বাজারমূল্য ৫৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
জানা গেছে, কেজিডিসিএল আবাসিক গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ৭৫ হাজার ৮শ গ্রাহক আবেদন করেছে। এভাবে এক লাখ আবেদন নেওয়া হবে। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছে, এক লাখ গ্রাহক না হওয়া পর্যন্ত তারা অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া চালু রাখবে। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেই অনলাইন প্রক্রিয়া বন্ধ করবে। তারপর চলবে আবেদন যাচাই-বাছাই। এরপর নির্বাচিত আবাসিক গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার দেয়া হবে। জানা গেছে, বকেয়া বিল পরিশোধ করে আবাসিক গ্রাহকরা প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের আবেদন করতে পারবেন। প্রতিটি গ্যাসের চুলার জন্য রাইজার থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত জিআই লাইন গ্রাহককে বহন করতে হবে। আর এসব লাইন যদি লিকেজ হয় অনুমোদিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়েই মেরামত করতে হবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর কোতোয়ালি, চকবাজার, সদরঘাট, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, পাহাড়তলী, খুলশী, ইপিজেড, আকবরশাহ, ডবলমুরিং, বন্দর, হালিশহর, পতেঙ্গা এবং বাকলিয়ায় কেজিডিসিএল গ্রাহক প্রি-পেইড মিটার পাবেন।