নিজস্ব প্রতিবেদক
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব অভিযানে গত এক মাসে ৬৪৪টি হাইড্রোলিক হর্ণ জব্দ করা হয়েছে। এ সময় হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার ও শব্দ দূষণের দায়ে ১ লাখ ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বিভিন্ন পরিবহনের চালক-কর্তৃপক্ষকে।
ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবারও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সিএমপির কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন যানবাহন থেকে ৬১ হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। অভিযানে ৮ যানবাহনকে মামলা দেওয়ার পাশাপাশি ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়া, আন্দরকিল্লা, জামালখান, মেডিকেল গেট, প্রবর্তক, বহদ্দারহাট মোড়, চান্দগাঁও বাস টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২০টি হাইড্রোলিক হর্ণ জব্দ করা হয়। শব্দদূষণ ও কালো ধোঁয়া নির্গমনের অপরাধে পাঁচটি যানবাহনকে মামলা দিয়ে ৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
গত ১৩ অক্টোবর নগর ও জেলায় অভিযান চালিয়ে ২২৬টি হাইড্রোলিক হর্ণ জব্দ করা হয়। এসময় ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। গত ১৯ অক্টোবর নগরীর ওয়াপদা মোড়ে অভিযান চালিয়ে ৬২টি হাইড্রোলিক হর্ণ জব্দ এবং ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও গত ২৯ সেপ্টেম্বর শব্দদূষণের দায়ে ২১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এসব অভিযানের নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয় ও গবেষণাগারের পরিচালক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম। এ সময় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) একটি দল অভিযানে সহায়তা করেন।
জানা যায়, শহর এলাকায় শব্দ বা আওয়াজের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৩৫ থেকে ৪৫ ডেসিবল। আর নগরে-বন্দরে ৪৫-৫০ ডেসিবলের বেশি নয়। কিন্তু বর্তমানে শব্দের মাত্রা ৮০ থেকে ১০০ ডেসিবলেরও বেশি। শব্দদূষণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থ চিন্তা ও চেতনায় বাধা সৃষ্টি করে। নগরজীবনে স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে শব্দদূষণ। শব্দদূষণের কারণে একদিকে জনগণ যেমন শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকিতে রয়েছেন, সেই সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শব্দদূষণ দুশ্চিন্তা, অবসাদ, উদ্বিগ্নতা, নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ৩০টি কঠিন রোগের অন্যতম কারণ হলো শব্দদূষণ।
মুফিদুল আলম বলেন, নানা কারণে নগরীতে শব্দ দ‚ষণ বাড়ছে। ফলে নানা ধরণের রোগও বাড়ছে। শব্দদূষণ সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে হাইড্রোলিক হর্ণ জব্দ ও জরিমানা করা হয়েছে। আগামিতে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।