এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৭, আহত ৬০

74

সদ্য বিদায় নেয়া ২০১৯ সালে লোহাগাড়া উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানা ও উপজেলার বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুরো বছরের সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বছরের শুরুতে ২ ফেব্রæয়ারি চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাসের ধাক্কায় রূপন কান্তি দাশ (৫০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিল। ২৫ ফেব্রূয়ারি উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় হেলপার মুকুল শেখ (৪০) ও চুনতি ফরেস্ট অফিস এলাকায় ম্যাজিক গাড়ির ধাক্কায় পথচারী লিটন শীল (২৮) নিহত হয়েছিলেন।
এরপর ৬ মার্চ পদুয়া পেঠান শাহ গেইট এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় আবু বক্কর নামে ১০ বছরের এক শিশু মৃত্যুবরণ করেছিল। ২৬ মার্চ বার আউলিয়া মাজার গেইটের উত্তরে মীরপাড়া রোডের মুখে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকের চাপায় মোছাম্মৎ আবিদা (৬) নামে এক শিশু নিহত হয়। ২৮ মার্চ চুনতি জাঙ্গালিয়ার সীমান্ত গেইট এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মহিলা-শিশুসহ ৮ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়। নিহতরা হলেন আফজাল হোসেন ওরফে সোহেল (৩০), মো. সায়েম (২২), নুরুল হুদা (২৪), আবদুস শুক্কুর (২৮), তসলিমা আক্তার (২২), সাদিয়া (১৮ মাস), হাসিনা মমতাজ (৪৫) ও অজ্ঞাতনামা (২৬)।
২০ এপ্রিল চরম্বা নয়াবাজারের পশ্চিমে টংকাবতী সড়কে তামাকপাতাবাহী মিনিট্রাক উল্টে নজরুল ইসলাম (৩০) নামে এক শ্রমিক নিহত ও চালকসহ অপর ২ জন আহত হয়েছিল।২১ এপ্রিল আলুরঘাট সড়কের দর্জিপাড়া সংযোগস্থলে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহমদ কবির (৭০) নামে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছিলেন। পরের দিন ২২ এপ্রিল সদর ইউনিয়নের নেয়াজের টেক এলাকায় দুর্ঘটনায় এক এএসআই ও ৩ জন সিপাহী আহত হয়েছিলেন।
এরপর ৩ মে আধুনগর ব্রিজের কাছে একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় হাজী আবুল কাশেম সওদাগর (৭০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিলেন। ১২ মে লোহাগাড়া বটতলী মোটর স্টেশনে রাস্তা পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নাইমুল ইসলাম তামিম (৫) নামে এক শিশু নিহত হয়েছিল।
১০ জুন আমিরাবাদ রাজঘাটা ব্রিজ এলাকায় ফলবাহী একটি মিনিট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ২ ব্যবসায়ী আহত হয়েছিলেন। ৪ জুন আমিরাবাদ মল্লিক ছোবহান তজু মুন্সি গ্যারেজ এলাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষে মাওলানা জিয়াবুল হক (৪০) নামে ম্যাজিক গাড়ির চালক নিহত হয়েছিলেন। ১৪ জুন আধুনগর খাস মহাল এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সার ধাক্কায় আরফাত হোসেন (২৪) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী গুরতর আহত হয়েছিলেন।
২৭ জুলাই চুনতি হাজি রাস্তার মাথা এলাকায় বাস ও সিএনজি অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক সাইফুল ইসলাম (২৮) নিহত ও মো. ওসমান সিকদার (৩০) নামে এক যাত্রী আহত হয়েছিলেন।
৬ আগস্ট চুনতি সুফি নগর এলাকায় বাসের ধাক্কায় মো. ওমর উল্লাহ (১০) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছিল। ১৮ আগস্ট চুনতি বনপুকুর এলাকায় মাহেন্দ্রা ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে আবদুল মান্নান (৭০) নামে এক যাত্রী নিহত ও চালকসহ ১০ যাত্রী আহত হয়েছিলেন।
৬ সেপ্টেম্বর চুনতি নলবনিয়া এলাকায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ ১৫ জন আহত হয়েছিলেন। ২৯ সেপ্টেম্বর আমিরাবাদ রাজঘাটা এলাকায় বাসের ধাক্কায় মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক যুবক আহত হয়েছিল।
২ অক্টোবর পদুয়া ঠাকুরদিঘী এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মো. জাহেদুল ইসলাম (১২) নামে হেফজখানার এক ছাত্র নিহত হয়েছিল।
৬ নভেম্বর বটতলী মোটর স্টেশনে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় মো. হাতিম হোসেন লিমন (২৪) নামে মোটরসাইকেল আরোহী এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছিল। ২২ নভেম্বর চুনতি বনপুকুর এলাকায় বাসের ধাক্কায় মো. ইসমাঈল (২১) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ও অপর ১ জন আহত হয়েছিল।
৭ ডিসেম্বর আধুনগর হাতিয়ারকুল এলাকায় বাসের ধাক্কায় মো. ছলিমুল্লাহ (৩৩) ও মো. ফাহাদ (১৬) নামে দুই মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ৫ ডিসেম্বর চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক মো. রায়হান (২৭) নিহত ও ৮ জন আহত হয়েছিলেন। ২৬ ডিসেম্বর চুনতি বনপুকুর এলাকায় লরি গাড়ির ধাক্কায় পলাশ দাশ (৩৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিলেন। ২৮ ডিসেম্বর চুনতি মিঠার দোকান এলাকায় ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ২ জন মহিলা যাত্রী আহত হয়েছিলেন। ৩০ ডিসেম্বর চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় ২টি কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে সিরাজুল ইসলাম (৩৫) নামে এক চালক নিহত হয়েছিলেন।
নিরাপদ সড়ক চাই লোহাগাড়া উপজেলা শাখার আহবায়ক মোজাহিদ হোসাইন সাগর জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত না হওয়া, মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক বেশী থাকা ও দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় সতর্কতামূলক রোড সাইন না থাকায় এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়াছিন আরাফাত জানান, অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও আঁকাবাঁকা সড়কের কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয়ে থাকে।