এক পরিশুদ্ধ রাজনীতিক সফল প্রশাসক

254

একজন গুণী ব্যক্তিত্ব ও মার্জিত রুচির পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ এমএ সালাম। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন খাঁটি সৈনিক, জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত কর্মী এম এ সালাম লোভ লালসা সম্পদ অর্জনের মোহ থেকে দূরে থেকে সততার এক বিরল দৃষ্টান্ত। যোগ্যতা, সম্ভাবনা, জনপ্রিয়তায় সবার চেয়ে এগিয়ে, কিন্তু জাতীয় রাজনীতি ও ‘জোটের ভোট’ বিবেচনায় তাঁকে তাঁর প্রাপ্য ছেড়ে দিতে হয়েছে বারবার। হাটহাজারী-৫ আসনের জনগণের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন হল দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের (বর্তমানে সভাপতি) দায়িত্ব নিষ্ঠার সহিত পালন করে আসা এই জননন্দিত নেতা মহান জাতীয় সংসদে গণমানুষের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কিন্তু দলীয় সর্বোচ্চ ফোরাম ও নেত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতি অবিচল বিশ্বস্ত এ রাজনীতিবিদ দলের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন অত্যন্ত হাসিমুখে এবং মহাজোট মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে তাকে বিজয়ী করতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছেন। শেষ পর্যন্ত দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সামান্য হলেও মূল্যায়ন করেছিলেন।
ছাত্রজীবনে তিনি ছিলেন এক দুরন্ত কিশোর। উদ্যমী চঞ্চলচিত্তের এক বালক অভাবনীয়ভাবে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে স্বাধীনতাপিয়াসী, মানবতাবাদী, সাম্যসন্ধানী এক দ্রোহসৈনিক হয়ে উঠেন তৎকালীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা মোহাম্মদ আব্দুস সালাম। একজন যোগ্য ও দক্ষ নেতা, মানবিক মানুষ হতে যে সকল গুণাবলীর প্রয়োজন তাঁর সমস্ত রসদ বিদ্যমান রয়েছে এই রাজনৈতিকের মধ্যে। অদম্য সাহস, জেদ, সৃষ্টিশীলতা এবং ভেতরে ভেতরে একজন কবি মন যা তাঁর শৈল্পিক মনের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। হাটহাজারীর প্রবীণ ও আওয়ামী লীগে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রভাবশালী নেতা এম এ ওহাবের প্রয়াণের পর হাটহাজারীসহ গোটা উত্তর জেলায় সবদিক বিবেচনায় এম এ সালাম এর নাম উঠে আসে সবার আগে।
পিতা হাজী আবদুল আজিজ ও মাতা লুৎফুন্নেসা বেগম এর সাত সন্তানের পরিবারে চার পুত্র ও তিন কন্যা। ভাইদের মধ্যে ছোট মোহাম্মদ আবদুস সালাম এর ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন স্কুলে পড়া অবস্থায়। যুদ্ধের সময় তিনি গোপনে খাদ্য ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার মত সাহসিকতার কাজটা করতেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের নানা গতিবিধির খবর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দিতেন এ সাহসী বালক। ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য হন। ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য ও ১৯৮০ সালে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.কম (অনার্স), এম.কম (ফিন্যান্স) করা এম এ সালাম ১৯৯২ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে চমকপ্রদান করেন। তারপর ১৯৯৬ সালে সম্মেলনে দ্বিতীয়বার সাধারন সম্পাদক হন। ২০০৪ সালে তৃতীয়বার এবং ২০১২ সালের ২৫ ডিসেম্বর টানা চতুর্থবারের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৭ ডিসেম্বর ২০১৯ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রথমবারের মত কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বিপুল ভোটে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি যারা করি তারা সবাই সমান। একেবারে গ্রামীণ প্রান্তিক পর্যায়ে একজন কর্মী তাঁর অনেক অবদান। তাদের অবদান ও আমার অবদান প্রায় সমান। আমরা যারা নেতৃত্বের পর্যায়ে থাকি আমাদেরকে দল পরিচালনা করার জন্যে দেয়া হয়। সেখানে একথা ভাবার কোন অবকাশ নেই, যে আমি নেতা মানেই আমাকে কেন্দ্র করে সবকিছু হবে, আমার হুকুমেই সবকিছু চলবে, আমি মানেই সব কিছু তা না। তৃণমূলের একেবারে ওয়ার্ড ইউনিয়ন পর্যায়ের সকলের মতামতকে আমাকে মূল্য দিতে হবে।”
২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়েই এই প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজান তিনি। সততার প্রশ্নে আপোসহীন থেকে জেলা পরিষদের কার্যক্রমকে আরো বৃদ্ধি করে দেশ সেরা পরিষদে রূপান্তর করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের জনহিতকর কর্মসৃচী সম‚হ যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সচেষ্ট রয়েছেন। বিশেষ করে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচনে অসচ্ছল মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিনাম‚ল্যে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রশিক্ষণ শেষে তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য বিনামূল্যে সেলাই মেশিন বিতরণ, মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছর বিপুল অংকের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, অসচ্ছল, দরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থদের তৈরি সামগ্রী বিপণনের জন্য বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে জেলা ও উপজেলায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, অবৈধ দখল থেকে জেলা পরিষদের বিপুল পরিমান ভূমি উদ্ধার করে মার্কেট এবং কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স নির্মাণ ও বরাদ্দ প্রদান করে বিপুল পরিমান রাজস্ব আহরণ, ডিজিট্যাল সেন্টার ও তথ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, দুঃস্থ ও অসহায় ব্যক্তি এবং শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান, স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, বন্যা, ঘুর্নিঝড়, জলোচ্ছ¡াস, পাহাড়ধস সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জরুরি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, খেয়া ও ফেরীঘাট সমূহের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের রাজস্ব আদায় বহুগুণ বৃদ্ধি করে উন্নয়ন কর্মকাÐে বরাদ্দ প্রদান করে আসছেন। সর্বোপরি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদকে দ‚র্নিতিমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহীমূলক জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে।
নদীর যেমন জোয়ার-ভাটা, অমাবস্যা-পূর্ণিমা। শতবাধা, সীমাবদ্ধতা থাকা সত্তে¡ও কাজ করার যে ইস্পাত কঠিন মনোবল তা কেবল এই নেতার মধ্যেই দেখা যায়। সেজন্যেই ২০১৬ সালে সমগ্র বাংলাদেশে জেলা পরিষদ নির্বাচনে, দলীয় মনোনয়ন প্রদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাঁর এই মনোনয়ন প্রাপ্তিতেই আনন্দের বন্যা বয়ে যায় জনসাধারনের মনে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, চারিত্রিক সততা ও গুণে মানে তাঁর ধারে কাছে কেউ ছিলনা বলেই, তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বরং এতে তিনি আরো বেশি বিনয়ী হয়েছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর হতে আজঅবদি দেশরত্নের হাতকে শক্তিশালী করার কাজে নিয়োজিত আছেন। তাঁর উপর অর্পিত এই মহান দায়িত্বকে ধর্ম মেনে নিয়েই কঠিন সাধনা করে চলেছেন। তাঁর চেয়ারকে আলোকিত করেছেন এক অন্য আলোয়। ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে শুধুমাত্র গণমানুষের ভালবাসায় দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ক্লান্তিহীন ভাবে। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের কার্যক্রমকে আরো আধুনিক যুগোপযোগী করতে জেলা পরিষদের পুরাতন ভবনকে ভেঙে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণের প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদ মার্কেটে অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে স্থান্তারিত হয়েছে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সামরিক স্বৈরশাসন, সা¤প্রদায়িকতাসহ সকল দুঃশাসন বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করেছেন। ১৯৮১ সালে ছাত্রদের মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন তিনি। স্বৈরশাসনের সময় সাংগঠনিক কাজ করতে গিয়ে অসংখ্যবার জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। ১/১১ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কারাবরণের পর শত বাধা বিপত্তি ও তৎকালীন বিশেষ বাহিনীর ভয়ভীতি, চাপ উপেক্ষা করে জেলা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ রাখেন এবং ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় শেখ হাসিনার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বঙ্গবন্ধু কন্যা ছাড়া সংলাপ, নির্বাচন কোনটাতেই না যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন। তাঁর এই বক্তব্যে দল ও সর্বসাধারণের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়। দলীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বসমুহ যথাযত ভাবে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার মধ্যদিয়ে সুনিপুণভাবে পালন করেন বলেই বঙ্গবন্ধু কন্যা তাকে অত্যান্ত স্নেহ করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে দেশরতœ শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম জেলা থেকে বক্তব্যদানের জন্যে বেঁছে নেন এম এ সালামকে। তাঁর বক্তব্যে তিনি এই প্রজন্মের তারুণ্যের অহঙ্কার, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে শেখ হাসিনার পর দলের হাল ধরার অনুরোধ করেন। তাঁর এই বক্তব্য গোটা সম্মেলনের গতিপথ নির্ধারণ করে দেয়। প্রয়াত নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সেই বক্তব্যের জের ধরে কথা বলেছেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে যে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন, এতে করে দলের মধ্যে অত্যন্ত বিশ্বস্ত, সৎ ও ত্যাগী নেতারাও পাশাপাশি বাছাই হয়ে যাচ্ছেন। সম্পদ অর্জনের অসুস্থ এই প্রতিযোগিতায় তিনি কখনো নিজের নাম লেখাননি। এক/এগারোর সরকার তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদ তন্নতন্ন করে তদন্ত করেও, অস্বাভাবিক কোন কিছু খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। একারনেই ‘পরিছন্ন রাজনীতিবিদ’ হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ছোট্ট ঘটনা একটা বলতে হয়- একবার চট্টলার এক শিল্পপতি রাজনৈতিকের কন্যার বিবাহত্তোর সম্বর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন এম এ সালাম। সেখানে তিনি বেশ আশ্চর্য হয়ে বিশাল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্যান্ডেলের বাহার, আলোক ঝলমলে মঞ্চ সজ্জা, খাবার দাবার আয়োজনে বিলাসিতা, জাঁকজমকপূর্ণ দামী পোশাক আশাক সবকিছু খেয়াল করলেন। উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাৎ, বর-কনের সাথে ছবি তোলা ও আপ্যায়ন উপভোগ শেষে একসাথে বাসায় ফেরার পথে তিনি বেশ মন খারাপের সুরে নিজের বেলাতে এমন জমকালো আয়োজনের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করলেন। তিনি আফসোসের সহিত জানালেন, আজকালের বিয়েশাদীর ব্যাপারগুলো বড় বড় নেতারা, শিল্পপতিরা যে স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর তো এমন আয়োজনের মত সামর্থ নেই! এত সম্পদের মালিক তিনি নন। সেদিন তাঁর এই কথা গুলো সত্যি হৃদয় ছুঁয়ে যাবার মত ছিল। মনে মনে তাকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ হয়েছে।
সাংসদ না হলেও ব্যক্তি ও রাজনৈতিক এম এ সালামের অর্জন অনেক। তাঁর মেধা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এসব কিছু বাদ দিয়ে লোকমুখে তাঁর প্রতি সাধারণ মানুষের যেই শ্রদ্ধা ও ভালবাসা, কলুষিত এ নাগরিক সমাজে তা অত্যন্ত বিরল। সুফিবাদ, অতীন্দ্রিয়বাদ, ধর্মতত্ত¡, আইন এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাঁর গভীর প্রেম আমাদের মুগ্ধ করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিখ্যাত লাইব্রেরি প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারিত যে, সে ঘুমাইয়া পড়া শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত, তবে সেই নীরব মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত।’ -আমি মনে করি তিনি রাজনীতির পাঠাগার সমতুল্য হাজারো উত্থান পতন ও অভিজ্ঞতার জ্ঞানভাÐার। কবিগুরুর এই উক্তিটির মত করে বুকের ভেতর মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল বেঁধে রেখেছেন সযতেœ।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাইদুল কাদের বলেছেন, ‘রাজনীতি কাপুরুষের জন্য নয়, কালপুরুষের জন্য।’ এম এ সালাম আওয়ামী রাজনীতির কালপুরুষ। বক্তব্যে তিনি আরো বলেছিলেন, ‘ব্যানার পোস্টার দিয়ে নেতা হওয়া যায়না। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না, ক্ষমতা চিরদিন থাকেনা।’ এই সব বক্তব্যের মাঝে এম এ সালামের স্বভাবজাত সকল বৈশিষ্ট্যই ফুটে উঠে। অঢেল অর্থবিত্তের মাধ্যমে বড় নেতা হওয়া সম্ভব, সামনে পিছে গাড়ির বহর শোভাযাত্রা সম্ভব। কিন্তু মানুষের অন্তর থেকে আস্থা ও ভালবাসা অর্জনের কঠিনতর কাজটা কেবল এই নেতাই সম্ভব করেছেন। যার মধ্যে কোন দাম্ভিকতা নেই, অহংকার নেই। তাঁর বিনয় ও মানবিকতা তাকে উন্নত করেছে। উত্তর চট্টলার প্রান্তিক মানুষের ভালবাসায় তিনি বারবার সিক্ত হয়েছেন। বিশ্বাস একটাই; মানুষের এ ভালবাসা কখনো বৃথা যাবেনা। আপনার ভুবন ভুলানো হাসিতে পরিশ্রান্তের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। জীবন সুন্দর হোক, নির্মল হোক এক আলোকোজ্জ্বল শুদ্ধতম রাজনীতির বাতিঘর; এম এ সালাম আপনার সাধারণতা, আপনাকে অসাধারণ করে গড়ে তুলেছে। জয়তু এম এ সালাম।