এক দরপত্রে একজন ঠিকাদারকে একাধিক কাজ নয়

24

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাধারণ সভায় একজন ঠিকাদারকে এক দরপত্রে একাধিক কাজ দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চসিকের ২৫তম সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চসিকের সবচেয়ে বড় প্রকল্পের তৃতীয় লটের দরপত্রে ৩৭টি কাজের মধ্যে তিন ঠিকাদারের ৩৪টি কাজ পাওয়ার খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৯ জানুয়ারি প্রকল্প পরিচালককে তার কার্যালয়ে মারধর করেন অন্য ঠিকাদাররা। এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকালের সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে একজন ঠিকাদারকে এক টেন্ডার নোটিসে একাধিক কাজ দেওয়া হবে না। আর যেসব ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করতে পারবে না তাদের কালো তালিকাভুক্ত করব।
জানা গেছে, ২৯ জানুয়ারি প্রকল্প পরিচালককে মারধরের ঘটনায় চসিকের মামলায় এ পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ১২ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। হামলাকারী ১১ ঠিকাদারকে চিহ্নিত করেছে সিটি করপোরেশনের তদন্ত কমিটি।
আড়াই হাজার কোটি টাকার ‘এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়কসমূহের উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি চসিকের সবচেয়ে প্রকল্প। প্রকল্পের প্রথম ধাপে ২৯ কোটি টাকার ১১টি লটের কাজ ই-টেন্ডারের পরও লটারির মাধ্যমে বণ্টন করা হয়েছিল। পরে দ্বিতীয় ধাপের ২৬টি লটে মোট ১০৫ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হয়, যেগুলোর মূল্যায়ন শেষে কার্যাদেশও দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরে আহবান করা হয় ২২০ কোটি টাকার ৩৭টি কাজের দরপত্র। এটি খোলার পর তা মূল্যায়ন হলেও কাউকে এখনও কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। তবে কারা কাজ পেতে যাচ্ছেন তা জেনে গিয়েছিলেন ঠিকাদারদের কেউ কেউ। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে টেন্ডারের তথ্য আগেই ঠিকাদাররা জেনে যাওয়ায় চসিকের প্রকৌশল বিভাগকে দায়ী করা হয়।
এবারের ৩৭টি কাজের মধ্যে রুকনউদ্দিন নামের এক ঠিকাদারের ইকবাল অ্যান্ড ব্রাদার্স ২২টি, আলাউদ্দিন মোল্লার ডি-কনস্ট্রাকশন ট্রেড ৮টি এবং কাশেম কনস্ট্রাকশন নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে চারটি কাজ দেওয়া হচ্ছে বলে তারা জেনেছেন। এ থেকেই কাজ না পাওয়া ক্ষুব্ধ ঠিকাদারদের একাংশ হামলা চালায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চসিকের এক কর্মকর্তা বলেন, ম্যাটিক্স পদ্ধতিতে পয়েন্টের কারণে যেসব ঠিকাদারের অভিজ্ঞতা বেশি তারাই ঘুরেফিরে কাজ পায়। মূলত এই কারণে সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদন হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিগণ তাদের নিজ নিজ কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন। সভায় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব খালেদ মাহমুদসহ বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।