এক কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন টিসিবির জন্য

3

ঢাকা প্রতিনিধি

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১ কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার। এ জন্য খরচ হবে প্রায় ২০৫ কোটি টাকা। এ তেল টিসিবি সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করবে।
গতকাল বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় টিসিবির জন্য সয়াবিন তেল কেনার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে ডিমের বাজার স্থিতিশীল করতে প্রয়োজন হলে বিদেশ থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
সয়াবিন তেল ছাড়াও সংস্থাটির জন্য পাঁচ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে স্থানীয় সরবরাহকারীদের কাছ থেকে এসব পণ্য কিনবে সরকার।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কমিটির ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলোতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক।
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবে সরাসরি ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে এ তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭৩ দশমিক ৯৫ টাকায় কেনা হবে বলেও জানান তিনি।
আবদুল বারিক আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য আরেকটি প্রস্তাবে ৮৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই লটে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭১ টাকায় কেনা হবে। সামসিং এডিবল অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে ২০ লাখ লিটার, বসুন্ধরা মাল্টিফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড থেকে ৩৫ লাখ লিটার এবং সিনো এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার।
এদিকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে ৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয় করার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি। এর প্রতি কেজি দাম পড়বে ১১১ টাকা। নাবিল নওগাঁ ফুড লিমিটেড থেকে ১ হাজার মেট্রিক টন, এসিআই পিওর ফ্লাওয়ার লিমিটেড থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন এবং এমএস রায় ট্রেডার্স লিমিটেড থেকে ১ হাজার মেট্রিক টন ডাল ক্রয় করা হবে।
গতকাল সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ১৬টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ১৬টি প্রস্তাবই অনুমোদন পেয়েছে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ৭টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৪টি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ১টি, স্থানীয় সরকার বিভাগের ১টি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
এই ১৬টি প্রস্তাব বাস্তবায়নে মোট ১ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৫৬৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর দেশীয় ব্যাংক, এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের ঋণ থেকে ১ হাজার ৬০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রয়োজনে ডিম আমদানি
ডিমের বাজার স্থিতিশীল করতে প্রয়োজন হলে বিদেশ থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ডিম আমদানি করতে গেলে তো একটু সময় তো লাগবে। আমরা একটু দেখি। যদি এমনটাই সত্যি হয় যে, ডিম আমদানি করলে পরে এটা (দাম) কমবে, তাহলে আমরা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলব।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীতে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় উঠেছে। এর আগে ডিমের দাম এতটা বাড়তে দেখা যায়নি। ডিমের সঙ্গে ব্রয়লার মুরগিও কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পোল্ট্রি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, এই শিল্পের প্রায় ৭০ শতাংশই আমদানিনির্ভর। মুরগির খাদ্য, পরিবহন ব্যয়, জ্বালানির দাম ও ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় মুরগি ও ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মুরগির বাচ্চার দাম না পাওয়ায় দেশে এখন মুরগি ও ডিমের উৎপাদন সঙ্কটে পড়েছে। সব মিলিয়ে দাম বাড়ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটা মন্ত্রণালয় ডিমের ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করব কীভাবে কমানো যায়। তবে সবকিছু কিন্তু রাতারাতি করা সম্ভব না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কবে স্বাভাবিক হতে পারে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা অনেকেই আশাবাদী, অক্টোবরের মধ্যে হয়ত পরিস্থিতি… কতগুলো ফ্যাক্টর তো কাজ করে। এখন আমি জানি না পুতিন সাহেব কবে যুদ্ধ বন্ধ করবেন। এটা তো আমার হিসাবের মধ্যে নেই।
সংবাদ সম্মেলনে শিগগিরই ভোজ্যতেলের দাম পুনর্নির্ধারণের কথা জানান মন্ত্রী।