একসাথে শ্মশানে গেল তারা

22

রাউজান প্রতিনিধি

বেঁচে থাকতে যুগল জীবনযাপন করতে না পারলেও একই শ্মশানে অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ বিদায় নিল আলোচিত প্রেমিক যুগল অন্বেষা চৌধুরী আশামনি ও জয় বড়ুয়া। গতকাল সোমবার বিকেলে ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ পরিবারের কাছে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করলে রাত ৯ টার সময় শেষকৃত্যের মাধ্যমে একই শ্মশানে তাদের অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, রবিবার রাতে রাউজানের পাহাড়তলী বড়ুয়াপাড়ায় সংঘটিত দুই প্রেমিক যুগলেল মৃত্যুর ঘটনার পর গতকাল সোমবার বিষয়টি টক অব দি রাউজান- এ পরিণত হয়। কি কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে, তা জানা গেলেও দুই প্রেমিক যুগলের মৃত্যু নিয়ে এখনো রহস্যের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে উপজেলাজুড়ে। একজনকে খুন করে অপরজনের আত্মহত্যার কথা বলা হলেও এলাকাবাসির অনেকের ধারণা দু’জনই আত্মহত্যার এমন পথ বেছে নিয়েছে। কারণ যেখানে তাদের এই ঘটনা সংঘটিত হয় সেটি ছিল জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। প্রেমিকা আশামনির গলায় ছুরির আঘাতও ছিল একটি। শরীরের অন্যকোনো জায়গায় আঘাতের চিহ্ন না থাকায় এটি উভয়ের সম্মতিতেই ঘটেছে বলে ধারণা তাদের।
নিহত প্রেমিকা মহামুনি গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের উদয়ন চৌধুরী বাড়ির রনজিৎ চৌধুরী বাবলুর মেয়ে অন্বেষা চৌধুরী আশামনি (১৯) এবং প্রেমিক একই গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডের নিলেন্দু বড়ুয়া নিলুর ছেলে জয় বড়ুয়া (২৬)। তাদের উভয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। বিষয়টি প্রেমিকার পরিবার মেনে নিতে পারছিল না। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকার লোকজনও অবগত ছিলেন।
আশামনির সাথে আগামি ১০ মার্চ রাঙ্গুনিয়ার পদুয়ার এক ফ্রান্স প্রবাসির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়েকে সামনে রেখে আশামনির পরিবার সবকিছু ঠিকটাক করে ফেলেছে- এমন তথ্য জেনে প্রেমিকা আশামনিও মেনে নিতে পারেনি। এক পর্যায়ে প্রেমিক জয় বড়ুয়ার সাথে আশামনির দীর্ঘ সময় কথা বলার পর উপায় বের করতে না পেরে তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
এ বিষয়ে পাহাড়তলী ইউপির চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন বলেন, তাদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কিন্তু প্রেমিকা আশামনির গলায় ছুরিকাঘাত দেখতে পাই। তার দেহের অন্যকোনো স্থানে আর কোনো ক্ষতচিহ্ন ছিল না। তাই এটি আত্মহত্যাও হতে পারে। তবে তারা যখন দু’জনই মারা গেছে, তাই বিষয়টি অজান্তেই থেকে যাচ্ছে।
রাউজান থানার ওসি মো. আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, সোমবার বিকেলে ময়না তদন্ত শেষে উভয়ের লাশ নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে থানায়।