একনেক বৈঠকে যেসব অনুশাসন দিলেন প্রধানমন্ত্রী

28

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও কৃচ্ছ্রসাধন করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ব্যয় বন্ধ করা হবে না। ব্যয় বন্ধ হলে অর্থনীতি অচল হয়ে যাবে। যেখানে দরকার সেখানে অবশ্যই ব্যয় করতে হবে। অহেতুক ব্যয়, আয়েশী ব্যয়, বিলাসী মনোভাব পরিহার করতে হবে। ঐহিত্যগতভাবে যদি কারো এসব মনোভাব থেকেও থাকে তা ভুলে যেতে হবে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
এনইসি সভা শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনগুলোর কথা তুলে ধরেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজেদের আত্মমর্যাদা, আত্মসম্মান সমুন্নত করতে হবে। জনগণের অর্থ ব্যয়ে আমাদের আরও বেশি বেশি সাবধান, কৃচ্ছ্রসাধন করতে বলেছেন। ব্যয় বন্ধ করা হবে না। ব্যয় বন্ধ হলে অর্থনীতি অচল হয়ে যাবে। যেখানে দরকার সেখানে অবশ্যই ব্যয় করতে হবে। অহেতুক ব্যয়, আয়েশী ব্যয়, বিলাসী মনোভাব পরিহার করতে বলেছেন। ঐহিত্যগতভাবে এগুলো আমাদের যদি কারো থেকেও থাকে তা ভুলে যেতে হবে। তিনি আগেও এগুলো বলেছেন। আজও এসব বিষয়ে সাবধান করে দিয়েছেন।
কৃচ্ছ্রসাধনের কথা বলে মন্ত্রী বলেন, ইকোনমি, ইকোনমি, ইকোনমি, কৃচ্ছ্র, কৃচ্ছ্র, কৃচ্ছ্র। অবশ্যই এর লাগাম টেনে ধরতে হবে টাইট করে। কিন্তু ব্যয় করা হবে। এভরি পেনি সুড বি এক্সপেন্ড। টাকা ঘরে রেখে আমরা ঘুমাবো না। যেখানে নিয়ম ও আইন অনুযায়ী দরকার সেখানে ব্যয় করবো এবং যেখানে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। টাকায় না হোক সেবায় লাভ হয়, জনগণের তুষ্টি হয়।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী সরকারের আমলা, কর্মকর্তা ও মন্ত্রীসভার সদস্যদের অহেতুক বিদেশ সফর নিরুৎসাহিত করতে বলেছেন। আপনারা জানেন ইতোমধ্যে এটা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আগামীতে আরও নিরুৎসাহিত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃতি করে এম এ মান্নান বলেন, সরকার প্রধান বিকল্প রফতানি বাজার খুঁজতে বলেছেন। এটা কন্টিনিয়াস প্রসেস। সার্বক্ষণিক আমাদের নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। আমাদের এখন উৎপাদন বেশি, পণ্য বেশি। এ জন্য এটা এখন বেশি দরকার। গ্লোভাইলাইজেশনের জায়গাও বেশি। কাজেই আমরা নতুন বাজার খুঁজবো এটা স্বাভাবিক। বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে যেসব জায়গায় গিট আছে, সেই গিটগুলো ছাড়াতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহে আমাদের কাজ করতে হবে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকারে প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দুঃসময়ের মধ্যেও সার্বিক বাজেট আমাদের পূর্বের তুলনায় বড়। আরও বড় হলে আমরা খুশি হতাম। নানা চাপ আছে, এর মধ্যেও আমরা বড় বাজেট করতে পেরেছি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্টিবোধ করেছেন।
যেসব মন্ত্রণালয় তার সক্ষমতার তুলনায় কম প্রকল্প গ্রহণ করছে, তাদের আরও বেশি প্রকল্প গ্রহণে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন। বিশেষ করে জনকল্যাণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে উদ্দেশ্য করে এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
এখন থেকে বিদেশি ঋণকে ফরেন এইড না বলে ঋণই বলা হবে বলে এনইসি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আমরা ফরেন এইড শব্দটির পরিবর্তে বিদেশি ঋণ শব্দটি প্রতিস্থাপন করেছি। এখন থেকে এটা ব্যবহার হবে। আমরা কালোকে কালো এবং সাদাকে সাদাই বলবো। ঋণকে আমরা ঋণই বলবো। আমরা সুদে আসলে এটা পরিশোধ করি। কাজেই এটাকে ঋণই বলবো। যারা আমাদের অনুদান দেয়, ঋণ দেয় তাদের আমরা অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু এর পরিমাণ অত্যন্ত কম। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকে গিয়েই এটা বলে এসেছেন। তিনি বলেছেন, আপনারা ঋণ দেন, আমরা তা শোধ করি। ঋণের বিষয়ে আমাদের খাতক ভাববেন না। আমরা পার্টনার, আমরা গ্রহীতা। আমরা সময়মত পরিশোধ করি। নানা শর্তের বিষয়টি আছে। আমরা মনে করি এটা (ঋণ) ঠিক নয়। ঋণ আদায়ের জন্য যেটা করার করবেন। কিন্তু শর্ত দেওয়াটা ঠিক নয়। আমাদের সমানভাবে ট্রিট করতে হবে।