একটি কাঠের সেতুই ১০ হাজার মানুষের ভরসা

87

কাঠের তৈরি প্রায় ৩০০ ফুট দীর্ঘ নড়বড়ে ঝুঁকিপূর্ণ একটি সেতু। এই সেতুই প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা। এটি ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়নহাট বাজার এলাকায় হালদা নদীর ওপর নির্মিত। এই সেতুর একটু দূরে গহিরা-হেঁয়াকো সড়ক। যা ফেনী-চট্টগ্রামের বিকল্প সড়ক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সেতুর অভাবে ওই সড়কের সঙ্গে নারায়নহাট এলাকাবাসীর সরাসরি যোগাযোগ নেই।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নারায়ণহাট ইউনিয়নের হাঁপানিয়া, সুন্দরপুর, সাপমারা, সুন্দর শাহর মাজার, কৈয়া পুকিয়া এবং পাবর্ত্য খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার কিছু অঞ্চলসহ পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস উপজেলার নারায়ণহাট বাজার এলাকায়। এই বাজার হয়েই তারা দেশের অন্য সকল অঞ্চলে যাওয়া আসা করেন স্থানীয়রা।
গত দুই দশক আগে লোকজনের চাঁদা, মুষ্টিচাল এবং ধান সংগ্রহ করে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে নারায়নহাট বাজার এলাকায় হালদা নদীর ওপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এটি রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয়ভাবে ইজারা দেওয়া হয়। ইজারাদারকে সেতু পারাপারে লোকজনকে পরিমাণমত ধান কিংবা ২-৫ টাকা পরিশোধ করতে হয়। সেই অর্থে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামতের কাজ চলে।
স্থানীয়রা জানায়, ইতিপূর্বে স্থানীয় বা জাতীয় নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা এসব এলাকায় ভোট চাইতে গিয়ে ওই কাঠের সেতুর স্থলে সড়ক সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পরও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
সড়ক সেতু না থাকায় নারায়ণ হাট ইউনিয়নের ৫ গ্রামের মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বর্ষাকালে সেতুটি পানির তোড়ে ভেঙ্গে যায়। আবার কখনো ডুবে যায়। তখন শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যাওয়া সম্ভব হয় না।
হাপাঁনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ মামুন বলেন, এলাকাটি শেষ প্রান্তে হওয়ায় আমাদের বাজার-ব্যবসা, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা-সবই নদীর ওপারে নারায়ণহাট গ্রামে।
নারায়ণহাট বাজারের ব্যবসায়ী মো. শওকত হোসেন বলেন, ১৫-২০ বছর ধরে আমরা সেতুর জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এখনো তা হয়নি। ভতিষ্যতেও হবে বলে মনে করিনা।
নারায়ণহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন বলেন, হালদা পার হলেই গহিরা-হেঁয়াকো প্রধান সড়ক। কিন্তু সেতু না থাকায় ওই সড়কের সঙ্গে মানুষের সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই। এ বিষয়টি স্থানীয় সাংসদকে অবহিত করা হয়েছে।
ফটিকছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ বলেন, সেতুটি দেখেছি। এর সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লে­খ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণহাট রেঞ্জ অফিসের সহকারি বিট কর্মকর্তা মো. আবদুস সাত্তার বলেন, কাঠ চোরদের পাকড়াও করতে ওই সেতু পার হতে হয়। এটি দোলনার মত দোলায় অনেক সময় চোরের দল পালিয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফিন বলেন, ওই এলাকায় সেতু নির্মাণ করার দাবি দীর্ঘদিনের। ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।