এই সরকারের আমলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়: ফখরুল

16

পূর্বদেশ অনলাইন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে সংলাপ সংলাপ খেলা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দল গলোকে ডেকে ডেকে সংলাপ করছেন।

কীসের সংলাপ? কেমন করে ইসি গঠন করবে? নির্বাচন কমিশন গঠন করে কী হবে? যে সরকার আছে সে সরকারই তো নির্বাচনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা নির্বাচনী ব্যবস্থাটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ যতদিন সরকারে থাকবে, ততদিন ইসি গঠন করে কোনো লাভ হবে না। সংলাপ করে কোনো লাভ হবে না।

কথায় আছে পুরনো জিনিস আবার নতুন বোতলে দিয়ে দেখিয়ে কোনো কাজ হবে না।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।

স্থানীয় জেলা সদর মাঠে আয়োজিত আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি বলেন, এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে সে নির্বাচন কোনদিন অবাধ সুষ্ঠু হতে পারে না। আমাদের অভিজ্ঞতা ১৪ সালের নির্বাচন, ১৮ সালের নির্বাচন। আমাদের অভিজ্ঞতা এখন স্থানীয় পর্যায়ে যে নির্বাচন হচ্ছে ইউপি নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন সব জায়গায় দেখছি সরকার দলীয় লোকজন জোর করে সব ফলাফল তাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাই এরকম নির্বাচন করে কোনো লাভ নেই। সমস্যার সমাধান এক জায়গাতেই। তা হচ্ছে নির্বাচনের সময়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে। যাকে আমরা বলি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আর এই সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে তার অধীনে ইসি গঠন করতে হবে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও মুক্তির বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সরকার বেআইনিভাবে ক্ষমতায় থেকে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য আইন দেখাচ্ছেন। খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। আমরা বারবার বলেছি মানবিক কারণে তাকে বিদেশে যেতে বাঁধা দেবেন না। কিন্ত তারা সে কথা শুনছে না। যদি এই কারণে খালেদা জিয়ার মৃত্যু হয় তার দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করে, গুম-হত্যার মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আহমেদ আযম খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাহমুদুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, শিশু বিষযক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতালন সালাহউদ্দিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, ওবায়দুল হক নাসির ও জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক ফরহাদ ইকবাল প্রমুখ।

এদিকে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর বুধবার টাঙ্গাইলে বিএনপির বড় ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটে। শুরুতে সমাবেশটি শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সেখানে সমাবেশের অনুমতি পাওয়া যায়নি। পরে জেলা সদর মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় বলে জেলা বিএনপির নেতারা জানান।