এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ৬ নভেম্বর

26

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) শুরু হবে আগামী ৬ নভেম্বর। এতে লিখিত পরীক্ষা চলবে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর ১৫ ডিসেম্বর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা, যা শেষ হবে ২২ ডিসেম্বর। গতকাল সোমবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহব্বায়ক অধ্যাপক মো. আবুল বাশারের সই করা এইচএসসি পরীক্ষার সূচি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এইচএসসি পরীক্ষার ঘোষিত সময়সূচিতে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশের পরীক্ষা হবে। এমসিকিউ অংশের জন্য ২০ মিনিট এবং সৃজনশীল অংশের জন্য সময় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এই দুই অংশের মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। সময়সূচিতে মোট ১১ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এইচএসসিতে এবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা না নিয়ে তা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে।
সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও গত বছর করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় প্রায় ৯ মাস পর নভেম্বরের মাঝামাঝি আর এইচএসসি পরীক্ষা হয় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ কেটে যাওয়ায় বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। নেই কোন বিধি-নিষেধ, জনজীবন ফিরছে আগের মতোই। এ অবস্থায় স্বাভাবিক স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।তবে চলতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় গড়িয়ে গেলেও এখনও এই দুই পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি । যদিও গত ২২ আগস্ট এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছিল আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি। সেই তারিখেও এই দুই পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়াও আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষার রুটিনও প্রকাশ করা হয়েছে।
পরে ২০২২ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সিলেবাস কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে হিসেবে এবার পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে এই দুই পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।
পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী, এবার প্রতিটি পরীক্ষা হবে দুই ঘন্টার। এরমধ্যে ১ ঘন্টা ৪০ মিনিটের রচনামূলক এবং ২০ মিনিটের নৈর্ব্যত্তিক। স্বাভাবিক সময়ে ১০০ নম্বরের বিষয়গুলোর পরীক্ষা হতো ৩ ঘণ্টা। কিন্তু এবার করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচিতে কম নম্বরে ও কম সময়ে পরীক্ষা হচ্ছে।
এছাড়া পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচিতে বিষয়ভেদে ৪৫ থেকে ৫৫ নম্বরে হবে এ পরীক্ষা। বিজ্ঞান বিভাগে ব্যবহারিকসহ বিষয়গুলোতে পরীক্ষার্থীদের প্রতি পত্রে ৪৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরমধ্যে রচনামূলকে ৩০ নম্বর ও নৈর্ব্যত্তিকে থাকবে ১৫ নম্বর। আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ব্যবহারিক ছাড়া বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রতি পত্রে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরমধ্যে ৪০ নম্বরের রচনামূলক ও ১৫ নম্বরের নৈর্ব্যাত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা হবে ৫০ নম্বরের।
ব্যবহারিক ছাড়া বিষয়েগুলোর রচনামূলকের ৪০ নম্বরকে ৭০ নম্বরে এবং নৈর্ব্যক্তিকের ১৫ নম্বরকে ৩০ নম্বরে রূপান্তর করে ফল প্রস্তুত করা হবে। আর ব্যবহারিকসহ বিষয়গুলোর রচনামূলকের ৩০ নম্বরকে ৫০ নম্বরে এবং নৈর্ব্যক্তিকের ১৫ নম্বরকে ২৫ নম্বরে রূপান্তর করে ফল প্রস্তুত হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের ৫০ নম্বরকে ১০০ নম্বরে রূপান্তর করা হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহব্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমিরুল ইসলাম জানান, কম নম্বরে পরীক্ষা হলেও তা ১০০ নম্বরে রূপান্তর করে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ সম্পন্ন করেছি। আমরা যথাসময়ে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’