ঋণের টাকায় কেনা টমটম ছিনতাই, নিঃস্ব কলেজছাত্র!

5

সোয়েব সাঈদ, রামু

কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মিজান। বাবা-মায়ের, ছোট ভাই-বোনদের জীবিকার তাগিদে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মাত্র ২০ দিন আগে একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক (টমটম) কিনেন। সেটি চালিয়ে পরিবারের হাল ধরার চেষ্টা করছিলেন মিজান। কিন্তু সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র গত শনিবার দুপুরে চেতনানাশক খাইয়ে ও মারধর করে উপার্জনের একমাত্র সম্বল টমটম গাড়িটি ছিনিয়ে নেয়। স্বজনরা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
ছিনতাই ও মারধরের শিকার মো. মিজান (২০) রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের উত্তর ফতেখাঁরকুল গ্রামের রশিদ আহমদের ছেলে।
মিজানের জেঠাতো ভাই ছৈয়দ আলম জানান, শনিবার সন্ধ্যায় আমরা খবর পাই রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চা বাগান এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পাশে মিজান কাতরাচ্ছে। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে মূমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাতেই তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। মিজানের গলায় জখম ও কালো দাগ রয়েছে। ছিনতাইকারিরা মিজানকে চেতনানাশক খাইয়েছে এবং মারধর করে টমটম গাড়িটি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে বলে তার ধারণা।
তিনি আরো জানান, মিজান কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী। দরিদ্র পরিবারের হাল ধরতে সে পড়াশোনার পাশাপাশি ঋণের টাকায় ক্রয় করা টমটম চালাতে শুরু করে। গাড়িটি ক্রয়ের মাত্র ২০ দিন পর এ ছিনতাইয়ের ঘটনা সংঘটিত হলো। এখন একদিকে তার জীবন সংকটাপন্ন, অন্যদিকে গাড়িটি ক্রয়ের জন্য নেয়া ঋণের টাকা শোধ করার চিন্তায় পরিবারের সদস্যরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
শনিবার রাতে মিজানের জেঠাতো ভাই ছৈয়দ আলমসহ কয়েকজন রামু থানায় গিয়ে বিষয়টি অবহিত করলে পুলিশ তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা।
মিজানের পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা বিভিন্ন স্থানে খুঁজেও টমটম গাড়িটির সন্ধান পাননি। তবে শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঈদগাঁও বাস স্টেশনে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরায় টমটম গাড়িটি যেতে দেখা গেছে।
রামু থানার এসআই মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন জানান, ছিনতাইয়ের শিকার টমটম চালকের স্বজনরা থানায় গিয়েছিলেন। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। জ্ঞান ফিরলে টমটম চালকের সাথে কথা বলে আরো তথ্য নেয়া হবে। তবে এ নিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ আমরা পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।