উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী (১৯৪৬-১৮৭৩)

104

ব্রিটিশ ভারতের খ্যাতনামা চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী স্যার উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী ১৯৪৬ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি মারা যান। তিনি কালাজ্বরের ওষুধ ইউরিয়া স্টিবামাইন আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী ১৮৭৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিহারের মুঙ্গের জেলার জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নীলমনি ব্রহ্মচারী ছিলেন চিকিৎসক ও মায়ের নাম সৌরভ সুন্দরী দেবী। উপেন্দ্রনাথ জামালপুরে পূর্ব রেলওয়ের বয়েজ হাইস্কুলে পড়েন। ১৮৯৩ সালে হুগলি কলেজ থেকে গণিতে প্রথম শ্রেণীর অনার্সসহ বিএ পাস করেন। ১৮৯৪ সালে প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে রসায়নে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৮৯৮ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এলএমএফ, ১৮৯৯ সালে ভেষজ বিজ্ঞান ও শল্যচিকিৎসায় প্রথম স্থান নিয়ে এমবি পাস করেন এবং গুডিভ ও ম্যাকলাউড পদক পান। ১৯০২ সালে এমডি ও পরে শরীরতত্তে¡ পিএইচডি উপাধি পান। পিএইচডিতে তার গবেষণার বিষয় ছিল রক্তের লোহিতকণিকার ভাঙ্গন। চাকরি জীবনের শুরুতে উপেন্দ্রনাথ ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে যোগ দেন। ১৯০৫-১৯২৩ সাল পর্যন্ত ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে ভেষজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে ও ১৯২৩-১৯২৭ সাল পর্যন্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অতিরিক্ত চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। ১৯২৭ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজে ক্রান্তীয় ভেষজ বিজ্ঞানের সাম্মানিক অধ্যাপক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-রসায়নের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি ব্রহ্মচারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থাপন করে ওষুধ প্রস্তুত করেন। ১৯২০ সালে উপেন্দ্রনাথ তৈরি করেন ইউরিয়া স্টিবামাইন। ১৯২২ সালে ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চে ৮ জন কালাজ্বর রোগীকে সুস্থ করার বিবরণসহ তার আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়। গবেষণাপত্রে ওষুধটির বিষাক্ততা সম্পর্কে আলোচনা করেন। ১৯২৩ সালের জুলাই মাসে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল গেজেটে ইউরিয়া স্টিবামাইন সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতার বর্ণনা প্রকাশিত হয়। ১৯২৪ সালের এপ্রিল মাসে উপেন্দ্রনাথ আরও কিছু তথ্য প্রকাশ করেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল গেজেটে। কালাজ্বর ছাড়াও উপেন্দ্রনাথ ফাইলেরিয়া, ডায়াবেটিস, কুষ্ঠ, মেনিনজাইটিস প্রভৃতি নিয়েও গবেষণা করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্বন্ধে বইয়ের মধ্যে ট্রিটিজ অন কালাজ্বর বিখ্যাত। উপেন্দ্রনাথ ইংল্যান্ডের রয়্যাল সোসাইটি অব মেডিসিনের সভ্য, ইন্দোরের ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের (১৯৩৬) সভাপতি ও নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯২৯ সালে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কারের জন্য তাকে বিবেচনা করা হয়েছিল। সূত্র : ইন্টারনেট