উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তহীন বিএনপি

38

জাতীয় সংসদ পর এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিকে চোখ সবার। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কোন ভূমিকায় থাকছে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। নির্বাচনে দলটি অংশ নিচ্ছে কিনা সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে। তবে দলের একটি অংশ দাবি করছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নিবে না বিএনপি। কারণ নির্বাচনে অংশ নিলেও একই পরিণতি হবে। অবশ্য অপর একটি পক্ষের দাবি, স্থানীয় নির্বাচনে না গেলে নেতাকর্মীদের ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। অবশ্য কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করবে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়া না নেয়ার বিষয়টি।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক ‘কারচুপির’ অভিযোগ তোলে বিএনপি। এরই মধ্যে আগামী মার্চে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কথা আলোচনায় এসেছে। ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়ে লবিং শুরু করেছেন। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে এখনো কোনো ধরনের অবস্থানের কথা জানানো হয়নি।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নানা হিসেব মিলাতেই ব্যস্ত দলটি। ভোটে যাওয়া না যাওয়া নিয়েও চলছে নানা সমীকরণ। ভোটে যাওয়ার পক্ষে যেমন মত আছে, তেমনি না যাওয়ার পক্ষেও বিএনপি নেতাদের মত আছে। ভোটে গেলে কারচুপি হওয়ার শঙ্কা যেমন কাজ করছে, তেমনি ভোটে না গেলে নেতাকর্মীদের ধরে রাখা নিয়েও শঙ্কিত দলটি। এ অবস্থায় সুস্পষ্টভাবে কোনো নির্দেশনাও নেই কেন্দ্র থেকে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে শুধু কারচুপি নয়, পুকুর চুরি হয়েছে সেটা সবাই জানে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গেলেও একই অবস্থা হবে। আবার নির্বাচনে অংশ না নিলে নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্যম থাকবে না। তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আপাতত কিছু বলা যাচ্ছে না। সময় আছে, পরিস্থিতি বলে দিবে কি করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়ে দিয়েছেন আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে সারা দেশে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে। এরপর থেকেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যে নানানভাবে আলোচনায় আসতে শুরু করেছেন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে স্থানীয় এ নির্বাচন নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি। ভোটে যাওয়ার পক্ষে দলের অনেকের মত থাকলেও পূর্ব অভিজ্ঞতায় বর্জনের চিন্তাও করা হচ্ছে দলটির পক্ষ থেকে।
নগর বিএনপির সিনিয়র এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলীয় ফোরামে বিচ্ছিন্ন আলোচনা হচ্ছে। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এখন নির্বাচন নামের নাটক হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের অনিয়ম, কারচুপি নিয়ে এখন কাজ করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দেরি আছে, নীতিনির্ধারকরা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি পরে নির্দলীয় উপজেলা নির্বাচনে ভোটে অংশ নিয়েছিল। ছয় পর্বের এ নির্বাচনে প্রথম তিন পর্বে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীদের মধ্যে সংখ্যায় বিএনপি এগিয়ে ছিল। তবে পরের তিন পর্বে তাদের ছাপিয়ে যায় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা।
কথা হলে নগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, নীতিনির্ধারকরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন। কেন্দ্র থেকে যেমন নির্দেশনা আসবে সেভাবে আমরা কাজ করবো। পরিবেশ-পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে নীতিনির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নিবেন।