উন্নয়নশীল বিশ্বে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হোক

11

 

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। বিষয়টি সমগ্র জাতির জন্য গর্বের। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন পাকিস্তানি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে এদেশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান শক্তভাবে হাল ধরে ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিপদগামী কিছু সেনাকর্মকর্তার হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নির্মমভাবে শহীদ হন। এরপর দেশ কাÐারিহীন হয়ে পড়ে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসীন হন। তার পরবর্তী পাঁচবছর আবার স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী সরকার ক্ষমতালাভ করে। অনেক কাঠখড় পোড়ার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে দেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রী হবার পর দেশের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। যার ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বল্পোন্নত বাংলাদেশ ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে যায়। ২০২১ সালে জাতিসংঘ দেশটিকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘ হতে বলা হয়েছে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। যার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তথা বাংলাদেশ পাঁচ বছর সময় পাচ্ছে। আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্ব পূর্ণ সময়।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ, দেশের উৎপাদিত শিল্পপণ্য রপ্তানি, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের রেমিটেন্স, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর হতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধিসহ যে সকল উন্নয়ন কর্মকাÐের কারণে দেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আসতে যাচ্ছে সেসব সেক্টরে ধারাবাহিক উন্নতি ছাড়া বাংলাদেশ এই অর্থনৈতিক সাফল্য ধরে রাখতে পারবে না।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আয়োজনে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র হতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন এবং দেশের অগ্রগতি বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেকোন উপায়ে দেশের অগ্রগতি ধরে রাখার অভিমত ব্যক্ত করলেও সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা এক্ষেত্রে একটি প্রয়োজনীয় বিষয়।
আমরা জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী লক্ষ বাস্তবায়নে ইতোপূর্বে অত্যন্ত দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু দেশের উন্নতি অগ্রগতির অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য দেশের স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। সরকারের ধারাবাহিকতা প্রবাহমান থাকলে নিশ্চিত হবে স্থিতিশীলতা। দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দলমত নির্বিশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করা দেশবাসীর কর্তব্য। আমরা জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী এবং উন্নয়নের রাজনীতি বিরোধীদের দেশি-বিদেশি প্রতিপক্ষকে ভয় পায় না। লক্ষ বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অদম্য যাত্রা অব্যাহত থাকবে। এ মেধাবী প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে সাধারণ জনগণসহ দেশের সকল সেক্টর সংশ্লিষ্টদের নিরলস ভাবে কাজ করে যেতে হবে। বাড়াতে হবে দেশের রাজস্ব আয়ের খাত। কৃষি শিল্প-বাণিজ্যে আরো এগিয়ে নিতে হবে দেশকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় দেশ যে সম্মান অর্জন করছে তা সমগ্র দেশের মানুষের গর্বের ধন। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো দেশ হিসেবে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হোক এমন আশা পোষণ করার পাশাপাশি দেশের সর্বস্তরের মানুষকে একটি অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত দেশ হিসেবে দাঁড় করাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিজ্ঞার সাথে একা হয়ে নিরলস সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। বাঙালির সাফল্যগাঁথা রচনায় দেশের সকল মানুষ এগিয়ে আসুক এমন কামনা অর্থনীতিবিদসহ দেশের উন্নয়নকামী বিজ্ঞজনদের।