‘উদ্বেগজনক’ পরিস্থিতির দিকে ডেঙ্গু

20

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত চারদিনে নগরীতে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৬৮ জন। গেল মাসে ৩’শ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। এ মৌসুমে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬ জন। পুরো আগস্ট মাসে আক্রান্ত ছিলো ৬৮ জন, চলতি মাসের শুরুর চারদিনে সমসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ ছাড়া বিরতি নিয়ে অল্প পরিসরে বৃষ্টি মশার প্রজননবান্ধব পরিবেশ তৈরি করছে। তাই ব্যাপকহারে মশক নিধন, প্রজননস্থল ধ্বংস ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করা না গেলে ভয়াবহ রূপ নিতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। এমন মন্তব্য দায়িত্বশীলদের।
বিষয়টি মাথায় রেখে মশার প্রজনন উৎস ধ্বংসে অভিযান পরিচালনা করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। অভিযানের অভিজ্ঞতা থেকে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম পূর্বদেশকে বলেন, ‘সম্ভাব্য মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ভবনের ছাদ বাগার পরিদর্শন করে দেখেছি সবচেয়ে বেশি মশার প্রজনন সেখান থেকে হচ্ছে। জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু মশার জন্ম হবে- এ নিয়ে ছাদ বাগান মালিকদের কোনো মাথাব্যাথা নেই। অনেককে জরিমানা করা হচ্ছে। তবুও আমরা চাচ্ছি মানুষ সচেতন হোক’।
আবুল হাশেম ডেঙ্গু মোকাবেলায় চসিকের কার্যক্রম নিয়ে বলেন, ‘আমাদের এডালটিসাইডের সংকট ছিলো, সেখানে ২ হাজার ৯০০ লিটার কেনা হয়েছে এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে। এসব ওষুধ আমরা নিয়মিত ছিটাচ্ছি’।
এদিকে মশার মৌসুম শুরুর পর থেকে নির্মাণাধীন ভবন, ছাদ বাগান ও সম্ভাব্য মশার প্রজনন উৎস ধ্বংসে কাজ করছে সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সিটি কর্পোরেশন জানাচ্ছে, পরিষ্কার ও বদ্ধ পানি এডিশ মশার প্রজননক্ষেত্র। তাই বাসা বাড়ির আশেপাশে ডাবের খোসা, ফুলের টব, ছাদ বাগান, ফ্রিজের ট্রে, এসির জমা পানি, পরিত্যাক্ত টায়ার, প্লাস্টিক বোতল ও পানির ড্রামে যাতে তিন দিনের বেশী সময় পানি জমে না থাকে সে দিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।
চসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। সাধারণত বর্ষার মধ্যে জুলাই থেকে অক্টোবরের মাঝে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। বর্তমানে কারও জ্বর বা ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে চসিক জেনারেল হাসপাতাল ও আরবান হেলথ সেন্টারে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য তিনি পরামর্শ দেন। ইতোমধ্যে চসিক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে ছাদবাগান, নির্মাণধীন ইমারতসহ বিভিন্ন বসতবাড়ীতে অভিযান শুরু করেছে। ইতোমধ্যে জনসচেতনতার লক্ষ্যে র‌্যালি, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করাসহ দোকানপাটে, বাসাবাড়িতে লিফলেট বিতরণ করেন এবং স্থানীয় আবাসিক এলাকার বিভিন্ন বাড়ি ঘরের ছাদ বাগান পরিদর্শন করছে সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্টজন।