উত্তর মেরুর ‘লাস্ট আইসে’ ভাঙন

20

 

উষ্ণায়নের জেরে ক্রমেই ছোট হচ্ছে উত্তর মেরুর বরফের চাদর। এ নিয়ে বারবার সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবার উত্তর মেরুর প্রাচীনতম ও সবচেয়ে পুরু বরফের চাদরেও এক প্রকান্ড গর্ত চোখে পড়লো জলবায়ু বিজ্ঞানীদের। তারা বলছেন, ওই অংশটিকেই সবচেয়ে স্থিতিশীল বলে এত দিন জানতেন তারা। সেখানেও ভাঙন ধরায় এখন ভয় হচ্ছে, এবার কি সেখানেও বরফ গলতে শুরু করবে! উত্তর মেরুর ওই অংশকে পৃথিবীর লাস্ট আইস বলা হয়। সেই শেষ বরফেও ফাটল ধরে একটি ফাঁকা অংশ তৈরি হয়েছে। তার নিচ দিয়ে বয়ে চলেছে পানি। এই ধরনের ফাটলকে পলিনিয়া বলে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, লাস্ট আইস এলাকার অন্তর্ভুক্ত কানাডার এলসমেয়ার আইল্যান্ডে বরফের মধ্যে ওই পলিনিয়া চিহ্নিত হয় গত বছরের মে মাসে। দুই সপ্তাহ ধরে বরফের মাঝে গর্ত হয়েছিল। প্রকৃতি বিজ্ঞানীদের অনুমান, উত্তর মেরুর জোরালো অ্যান্টিসাইক্লোনিক হাওয়ার জেরে পলিনিয়াটি তৈরি হয়েছিল। পরে সেটি বুজে গেলেও মেরুর ওই অংশ যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই বিজ্ঞানীদের। গত আগস্টে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে জিয়োফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারসে। সেখানে বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, ১৯৮৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এমন বেশ কিছু পলিনিয়া তৈরির খবর তাদের কাছে রয়েছে। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে সেই ছবি। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত প্রধান বিজ্ঞানী কেন্ট মুর জানান, ওই অংশে সমুদ্রের ওপর বরফের চাদর প্রায় ১৩ ফুট পুরু। অন্তত পাঁচ বছরের জমা বরফ। কিন্তু এই অংশও যে বিপন্ন হয়ে উঠছে, তা স্পষ্ট। ২০২১ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিনল্যান্ডে প্রতিবছর আরো দ্রুত বরফ গলে যাচ্ছে। এভাবে চললে এই শতকের শেষে লাস্ট আইস পুরো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।