উজানের ঢলে ফুলছে পদ্মা

28

শুভ্র শরতের শুরুতে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ বাড়ছেই। উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলে ফুলে ফেঁপে উঠছে পদ্মা। প্রতিনিয়তই বাড়ছে পানি। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ২৯ মিটার। আর রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা হলো ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। অর্থাৎ বর্তমানে বিপদসীমার মাত্র ২ দশমিক ২১ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মা।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক বলেন, গত ২১ আগস্ট (বুধবার) বিকেল ৩ টায় রাজশাহীর পদ্মা নদীতে পানির উচ্চতা মাপা হয়েছিল ১৫ দশমিক ৫২ মিটার। এর আগে ২০ আগস্ট (মঙ্গলবার) ছিল ১৫ দশমিক ২৫ মিটার। ফলে ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছিল শূন্য দশমিক ২৭ মিটার। এরপর থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৪ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে পদ্মায়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় রাজশাহীতে পদ্মার পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ২৯ মিটার। ফলে আজ বিপদসীমার মাত্র ২ দশমিক ২১ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মা। উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বিলম্বিত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানি বাড়তেই থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এনামুল হক আরও বলেন, গেল ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা (১৮.৫০) অতিক্রম করেছে মাত্র দুইবার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কেবল ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার। এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। এরপর পানি বাড়লেও আর এই রেকর্ড ভাঙেনি বলেও উল্লেখ করেন পাউবোর এই গেজ রিডার। খবর বাংলানিউজের
এদিকে শুক্রবার বিকেলে শহররক্ষা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে তীব্র স্রোত বইছে। স্রোতের তোড়ে পদ্মার পানি পাড়ের ওপর আছড়ে পড়ছে। এরই মধ্যে মহানগরীর বুলনপুর থেকে নবগঙ্গা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা শহররক্ষা বাঁধ ছুঁয়েছে পদ্মার পানি। এভাবে পানি বাড়তে থাকায় শহররক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবে) নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম বলেন, রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর শহররক্ষা বাঁধের উচ্চতা ১৯ দশমিক ৬৭ মিটার। তাছাড়া মহানগরীর পশ্চিমাংশে বুলনপুর থেকে পবার সোনাইকান্দি পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার বাঁধ সংরক্ষণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই পদ্মার পানি বাড়লেও বাঁধ নিয়ে মহানগরবাসীর এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও মন্তব্য করে নির্বাহী প্রকৌশলী।