উচ্ছেদের তিন মাস না যেতেই আবার দখল

79

অবৈধ দখলদারদের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মালিকানাধীন ভূমি ছেড়ে দেওয়ার আল্টিমেটাম দেয় সংস্থাটি। বেধে দেওয়া সময় শেষ হতেই উচ্ছেদে অভিযান চালায় চসিক। নগরীর বায়েজিদ এলাকার শের শাহ মেইন রোড, শিল্পএলাকা রোড, আবাসিক এলাকা রোডের প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দোকানপাট ও দখলদারকে উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু এর তিন মাস পার না হতেই ফুটপাত দখল করে আবারও শতাধিক দোকান নির্মাণ করছে দখলদাররা। তবে কোনভাবে অবৈধ দখলদারদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
জানা গেছে, বায়েজিদ এলাকার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের ফাইল অনুমোদন হয় ২০১৬ সালে। তখন থেকে তাদের প্রত্যেককে নিজ দায়িত্বে উচ্ছেদ করার জন্য তাগিদ দেয় চসিক। কিন্তু তারা নিজ দায়িত্বে উচ্ছেদ করেননি। তাই সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত তা উচ্ছেদ করে।
গত বছরের ১৮ অক্টোবর চসিকের উদ্যোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী ও স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) জাহানারা ফেরদৌসের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এ উচ্ছেদ অভিযান চালায়।
এতে বায়েজিদ এলাকার শেরশাহ মেইন রোড, শিল্পএলাকা রোড, আবাসিক এলাকা রোডের প্রায় ২ শতাধিক অবৈধ দোকানপাট ও দখলদারকে উচ্ছেদ করা হয়। দখলমুক্ত জায়গার পরিমাণ প্রায় ৪০ শতক।
গত মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, শেরশাহ এলাকায় সড়কের পাশে এখনও উচ্ছেদের চিহ্ন থেকে গেছে। দোকানগুলোর ভাঙা অংশ এলোপাতাড়ি পড়ে আছে। সড়কের উন্নয়ন কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন। এরই মাঝে আবারও পাকা দেয়াল দিয়ে দোকান নির্মাণ করছে দখলদাররা। অন্তত দশজন দোকানদার এ অবস্থাতেও দোকান করছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগে যারা এসব দোকান নিয়ন্ত্রণ করত, তারাই সিটি কর্পোরেশনকে ম্যানেজ করে দোকানগুলো নির্মাণ করছে।
কিন্তু তার কোন সতত্য পাওয়া যায়নি সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে কথা বলে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, তাদের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। সেখানে প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করে সন্দেহে থাকা ব্যক্তিদের ব্যাপারেও জানানো হয়েছে। থানা বিষয়টি মনিটরিং করছে। আর এদিকে সিটি কর্পোরেশন শীঘ্রই উচ্ছেদে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
সিটি কর্পোরেশনকে ম্যানেজ করার বিষয়ে তিনি জানান, এটা মোটেও সত্য নয়। থানাকেও একই কথা বলে বুঝ দিতে চেয়েছে তারা। তবে আগের দোকানদাররা প্রস্তাব দিয়েছে দোকানগুলোর বিপরীতে সিটি কর্পোরেশনকে ভাড়া দিয়ে বৈধভাবে ইজারা নিয়ে দোকান করতে। সেক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন।
একই বিষয়ে সংস্থাটির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম জানান, সরকারি জায়গা কারও ভোগদখল করার সুযোগ নেই। সিটি কর্পোরেশন নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে। অবৈধ দখলদারদের নিজ দায়িত্বে উচ্ছেদ করতে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু তাতে তাদের কর্ণপাত হয়নি। এখন আবার দোকান নির্মাণ করছে। যা সিটি কর্পোরেশন মেনে নিবে না। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হবে।
চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বিষয়টি নিয়ে অবগত হয়েছি। যারা দখল করছে, তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ ফুটপাত দখল করে দোকান নির্মাণ করা কোনভাবে সহ্য করা হবে না। অবৈধ দখল ও দখলদারদের বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরেশন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।