উচ্চতর আদালতের নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি

93

দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি বাংলাদেশে উৎপন্ন দুই নদী শঙ্খ/সাঙ্গু এবং মাতামুহ‚রী নদী ও বান্দরবানের পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে পাথর উত্তোলন করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পাথরের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে হাইকোর্ট পাথর উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক, বান্দরবান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ মামলার ১০ বিবাদীকে উক্ত বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ ও দেয়া হয়েছে। মামলার বিবাদীগণের নিষ্ক্রিয়তার কারণে বান্দরবানের দুই নদী ও অসংখ্য ঝর্ণার পাথর উত্তোলন জনিত পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। যার ফলে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় আমরা ব্যর্থ হলে আমাদের প্রকৃতির রৌদ্ররোসে পতিত হতে হয়। বিষয়টি পরিবেশ আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। যা মহামান্য উচ্চতর আদালতের দৃষ্টি গোচর হলে ্আদালত বান্দরবানের সাঙ্গু/শঙ্খ নদী ও মাতামুহ‚রী নদী এবং পাহাড়ি ঝর্ণা হতে পাথর উত্তোলন বন্ধের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ি করেছে। পরিবেশ সচেতন সাত ব্যক্তি ও সংগঠনের করা এ মামলায় মহামান্য হাইকোর্ট যথাযথ রায় প্রদান করেছে। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ১০ বিবাদীর।
প্রকৃত পক্ষে পাহাড়ি ঝর্ণা, নদীর পাথর সংশ্লিষ্ট বানাঞ্চলও পাহাড়েরই অংশ। পাথর গুলো উত্তোলন করলে পাহাড়ি প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যা কৃত্রিম ভাবে পুরণ করার কোন সুযোগ নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর স্থানীয় প্রশাসন কঠোর হলে প্রকৃতি ধ্বংসের তাবৎ কার্যক্রম বন্ধ করা কোন কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে অনেকখানি নির্লিপ্ত থেকে যান। আর কর্তৃপক্ষের এ দূর্বলতার সুযোগে স্বার্থান্বেষী মহল ও অসাধু ব্যবসায়িরা তা পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগিয়ে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে যায়।
অবৈধ ভাবে মানুষ পাহাড়ি নদী, ঝর্ণা থেকে পাথর ও বালি উত্তোলন করে ব্যবসাকান্ড চালিয়ে যায়। যা বন্ধকরণ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দায়িত্ব যাদের হাতে রয়েছে তারা কখনো উদাসীনতা, কখনো অবৈধ ব্যবসায়িদের দ্বারা নানা ভাবে প্রভাবিত হয়ে পরিবেশ বিরোধী এসব কাজ করার সুযোগ দিয়ে থাকতে দেখা যায়।
উচ্চতর আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছে তা বাস্তবায়নের দায়িত্বও সংশ্লিষ্ট বিবাদীগণের। আমরা মনেকরি সংশ্লিষ্টরা বান্দরবানের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে প্রতিরোধ ও বন্ধকরণ কর্মসূচি জোদার করবেন। আমরা আমাদের পৃথিবীর পরিবেশকে বাসযোগ্য রাখার ব্যাপারে সচেতন থাকতে পারছি না। প্রকৃত পক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতনতার সাথে কাজ করতে হবে। তার পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।