ঈদ বখশিশের নামে এখনও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

38

পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে গতকাল শনিবার থেকে নগরীতে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। এ সুযোগে নগরীর বিভিন্ন সড়কের যাত্রীদের কাছ থেকে ঈদ বখশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে গণপরিবহনের হেলপার ও কন্ট্রাক্টররা।
গতকাল শনিবার নগরীর বিভিন্ন রুটের গণপরিবহনে বখশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে দেখা গেছে। আবার কোনো কোনো রুটে গাড়ি সংকটের সুযোগে অন্য রুটের গাড়িগুলো ঈদ বখশিশের নামে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে।
গত ১২ আগস্ট সোমবার পবিত্র ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের ষষ্ঠ দিন গতকাল শনিবারও ঈদ বখশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কোন যাত্রী স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত টাকা রাজি নয়, তারপরও অনেকটা জোর করেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে গাড়ির হেলপাররা। গাড়িতে উঠার আগেই অতিরিক্ত ভাড়ার কথা বলে দিচ্ছে হেলপাররা। এ ভাড়া দিতে যারা অনিচ্ছুক তাদের গাড়িতে উঠতে নিষেধ করছেন তারা।
বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা মো. শহিদ বলেন, ঈদ আর পূজা আসলেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এ বাহানা শুরু হয়। ঈদের পাঁচদিন পরও ঈদের বখশিশ দাবি করছে তারা।
১০ নম্বর রুট বাসের হেলপার তমিজ উদ্দিনের বলেন, আমরা পেটের তাগিদে গাড়ি চালাচ্ছি। ঈদের পরবর্তী এই কয়েকদিনে যদি কিছু অতিরিক্ত ভাড়া না নিই তাহলে নিবো কখন? তাছাড়া সড়কে যেহেতু গাড়ি একটু কম, তাই ভাড়া একটু বেশি নিচ্ছি আরকি। এতে তো আর যাত্রীদের উপর চাপ পড়ছে না।
শহরের স্থায়ী বাসিন্দা পারভিন আক্তার জানান, ঈদ উপলক্ষে বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়েছি। সিএনজি অটোরিকশাও আগের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া বেশি চাইছে। নিরুপায় হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
ঈদ বখশিশে কারও আপত্তি না থাকলেও কেউ কেউ নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত দিতে রাজি হচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র জাহেদ বলেন, নির্ধারিত ভাড়াতো দিচ্ছি, আবার কিসের বখশিশ? মামার বাড়ির আবদার নাকি? সুযোগ পেয়ে তারা মাথাই উঠে বসেছে।
তিনি আরও বলেন, একদিকে গণপরিবহন সংকট তার উপরে বকশিশের কথা বলে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। এভাবে তো মানা যায়না। নগরীর জিইসি মোড় থেকে সী বিচ পর্যন্ত ভাড়া যেখানে ২০ টাকা, সেখানে ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, অতিরিক্ত ভাড়া দাবিতে কেউ কেউ প্রতিবাদ করলেও অনেকে নীরবে মেনে নিয়ে গন্তব্যে ফিরছেন।
বহদ্দারহাট থেকে আগ্রাবাদ যাচ্ছিলেন শাহরিয়ার আকবর। তিনি বলেন, ঈদের সময় বাস ভাড়া দু’চার টাকা বেশি নেয় এটা তো নতুন কিছু না। তারা ঈদ না কইরা সার্ভিস দিচ্ছে। ঈদের সময় একটু বেশি নিতেই পারে। দুই-তিনদিন হলে ঠিক আছে। কিন্তু এতোদিন ধরে ঈদ বখশিশ নেয়াটা উচিত নয়।
দেওয়ান হাট মোড়ের সার্জেন্ট মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ঈদ উপলক্ষে ভাড়া এখন ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি নিচ্ছে। অনেকে খুশি হয়ে আরও বেশিও দেয়। ঈদের সময় তো তাই আমরাও কিছু বলছি না। তবে কেউ যদি মাত্রা ছাড়িয়ে যায় এবং কেউ অভিযোগ করে তাহলে একটা কথা।
এ ব্যাপারে বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক পূর্বদেশকে বলেন, শহরের অভ্যন্তরীণ কোন রুটের পরিবহনে বখশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আমাদেরকে জানাবেন। আমরা ওই পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
তিনি আরও বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষ এখন ফিরতে শুরু করেছে। সেখানে তাদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি গাড়িকে জরিমানা ও ড্যাম্পিং-এ নেওয়া হয়েছে।