ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

2

মিতা পোদ্দার

১২ রবিউল আউয়াল। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ১২ রবিউল আওয়ালকে মুসলিম বিশ্ব মহানবীর জন্ম ও
ওফাতের দিবস হিসেবে পালন করে থাকেন। মূলত ঈদে মিলাদুন্নবী হলো ইসলামের শেষ নবী ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আগমন উপলক্ষে মুসলমানদের মাঝে পালিত এক আনন্দ উৎসব।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আরবি বর্ষ হিসেবে ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন। আর সে অনুযায়ী বাংলাদেশসহ বিশ্বেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ১২ রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের সাথে উদযাপন করে থাকেন। ঈদ অর্থ খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা। মিলাদ অর্থ জন্ম। মিলাদ ও নবী এ দুটি শব্দ একত্রে মিলিয়ে মিলাদুন্নবী বলা হয়। নবী মানে রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (দ.) বুঝানো হয়েছে। যিনি অন্ধকার ভেদ করে মরুপ্রান্তর মক্কায় সত্য ও ন্যায়ের আলোকরশ্মি প্রজ্বলিত করেছিলেন। তাই সীমিত জ্ঞান থেকে এইটুকু বলতে পার, ঈদে মিলাদুন্নবী অর্থ হুজুর পাক(সাঃ) এর জন্ম তথা পবিত্র বিলাদাত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা।
পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল বিশ্বভুবনের জন্য নিঃসন্দেহে রহমত ও বরকতময়। নবী আগমনের দিনে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান অত্যন্ত আদব ও সম্মানের সঙ্গে প্রিয় নবীর আগমনক্ষণ বিভিন্ন নাতে রাসুল, জশনে জুলুস, মিলাদ মাহফিল ইত্যাদির মাধ্যমে তার জন্ম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি স্মরণ করে তথা শানে রিসালাতের অনুপম আদর্শ ও শিক্ষার উপর সারগর্ভ আলোচনা করে উদযাপন করেন।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি মহব্বত ও ভালোবাসার পোষণ করা ঈমানের পূর্বশর্ত। এটি আল্লাহর মহব্বত ও ভালোবাসা প্রাপ্তির একমাত্র মাধ্যম। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন তোমাদের কেউ ততক্ষণ ঈমানদার হবে না যতক্ষণ তার পিতা-মাতা সন্তান-সন্ততি ও সব মানুষের চেয়ে আপন আর বেশি প্রিয় না হই। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা বহু বছর ধরে পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল দয়াল নবীজির পবিত্র শুভাগমন দিবস উপলক্ষে অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে মিলাদুন্নবী পালন করে আসছে। যা শরীয়তে দৃষ্টিতে বিদায়াতে হাসানা ও মুস্তাহাব। হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর শুভাগমন স্মরণে খুশি প্রকাশ করে মিলাদ শরীফ মাহফিল এর ব্যবস্থা করা, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরীফ পাঠ, তাওয়াললুদ বা জন্মকালীন ঘটনা মজলিস করে আলোচনা করা, দাঁড়িয়ে সালাম দোয়া, মোনাজাত ইত্যাদি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান করা। পরিশেষে বলা যায়, মিলাদুন্নবীর মাধ্যমে সমস্ত মুসলমানগণ তাদের নবী প্রেমকে শাণিত করে। মহান আল্লাহর দরবারে লাখো কোটিবার শুকরিয়া জ্ঞাপন করে এবং প্রিয় নবী (সা.)এর অনুসরণে জীবনযাপন করে ইহকালীন -পরকালীন কামিয়াবি অর্জন করে।

লেখক : প্রাবন্ধিক