ঈদগাঁওতে রাতদিন ফসলি জমির টপসয়েল লুট !

22

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় ফসলি জমি থেকে টপসয়েল কেটে নিচ্ছে ইটভাটা মালিকরা। বিভিন্ন ফসলি বিলে শতাধিক ভেকু মেশিন (স্কেভেটর) দিয়ে রাতদিন চলছে এ মাটিকাটা। আবাদি জমি থেকে এভাবে টপসয়েল কেটে নেয়ায় উর্বরা শক্তি হারাচ্ছে ফসলি জমিগুলো। এতে শস্য উৎপাদন কমে গিয়ে খাদ্য সংকটের শংকা প্রবল হচ্ছে।  সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ধমকা বিলের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ফসলি জমির টপসয়েল কাটা হচ্ছে। ডজনাধিক ভেকু মেশিন (এক্সেভেটর) ও শতাধিক ডাম্পার ট্রাক নিয়ে রাতদিন সমানতালে চলছে এ টপসয়েল কাটা। এতে ক্ষতবিক্ষত ও বিরানভূমিতে পরিণত হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার শষ্যভান্ডার খ্যাত ধমকা বিল। ক্রমাগত টপসয়েল কাটার ফলে জমির উর্বরা শক্তি কমে যাওয়ায় শষ্য উৎপাদন কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এতে এতদাঞ্চলে খাদ্য ঘাটতির শংকা করছেন তারা।  এ ছাড়াও একই ইউনিয়নের পালাকাটা ও লরাবাক গ্রামের মধ্যবর্তী বিলের অন্ততঃ চার পয়েন্টে ১০/১২ টি এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। ঈদগাঁও রাবারড্যাম রাস্তার মাথার অদূরবর্তী বিল ও পালাকাটা রেলক্রসিং এর পশ্চিমেও এক্সেভেটর দিয়ে টপসয়েল কেটে নিচ্ছে ইটভাটা মালিকরা। দক্ষিণলরাবাক-মোহনবিলা সংযোগ সড়কের দু পাশের বিলে ডজনখানেক এক্সেভেটর দিয়ে টপসয়েল কাটা হচ্ছে। টপসয়েল কেটে নেয়ায় ধমকা বিল পরিণত হচ্ছে বিরান ভূমিতে। উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের বোয়ালখালী বিল, ঈদগাঁও সদর ইউনিয়নের মাইজপাড়া ঝাইক্কা কাটা বিলেও চলছে একই কায়দায় মাটি লুট। এভাবে সর্বত্র টপসয়েল লুটের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে রাতেও শক্তিশালী ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে টপসয়েল কাটা অব্যাহত রেখেছে ইটভাটা মালিকরা। ফসলি জমি থেকে দিনরাত কেটে নেয়া এসব টপসয়েল শত শত ডাম্পার ট্রাকযোগে বিভিন্ন ইটভাটায় নেয়া হচ্ছে। আবাদি জমি থেকে টপ সয়েল কেটে নিয়ে পর্বতাকারের স্তুপ করা হয়েছে ইটভাটাগুলোতে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আইনের তোয়াক্কা না করে লোকালয়ের মাঝে ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার পাশে আবাদি জমিতে অবৈধ এসব ব্রিক ফিল্ড স্থাপন করা হয়েছে। অনুমোদন ও পরিবেশ ছাড়পত্রবিহীন এসব ইটভাটা বিগত প্রায় ২ যুগ ধরে এলাকার পরিবেশ প্রতিবেশ ধ্বংস ও সস্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যগত হুমকি সৃষ্টি করলেও সবসময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া বলেন, ফসলি জমি থেকে টপসয়েল কাটা বন্ধ করতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাতেও অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। টপসয়েল কাটা বন্ধে ফের অভিযান পরিচালনা করা হবে।