ই-কমার্স: ৩৪৩ কোটি টাকা ফেরত পাননি গ্রাহকেরা

13

প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সব গ্রাহক এখনো টাকা ফেরত পাননি। ২৭টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রাহকদের মোট অর্থ আটকে ছিল ৫২৫ কোটি টাকা। এটা শুধু ২০২১ সালের ৩০ জুনের পরে ই-কমার্স লেনদেন পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠানে (পেমেন্ট গেটওয়ে) আটকে থাকা টাকা।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য হচ্ছে, ১৩টি প্রতিষ্ঠান ৫২৫ কোটি টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ১৮২ কোটি ৪১ লাখ টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিয়েছে। এর মধ্যে ১০টি প্রতিষ্ঠানই ফেরত দিয়েছে ১৮২ কোটি ২১ লাখ টাকা। আর তিনটি দিয়েছে ২০ লাখ টাকা। নিজেদের টাকা ফেরত পাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা ২০ হাজার ২৯৯। বাকি ৩৪৩ কোটি টাকা গ্রাহকেরা কবে ফেরত পাবেন তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না। তবে পুরো বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, গ্রাহকেরা আস্তে আস্তে টাকা ফেরত পাবেন বলে আশাবাদী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়ার বিষয়টি সমন্বয় করছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল। সঙ্গে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ, সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও তাদের গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো। ই-কমার্সের ওপর অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধের ব্যাপারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, তারা বহু স্তর বিপণন পদ্ধতির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। আলাদিনের প্রদীপ ও আলেশা মার্টের গেটওয়েতে আটকে থাকা শেষ হলেও ব্যাংকে তাদের কিছু টাকা আছে। এগুলো গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধে ব্যবহার করা যায় কি না, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আর কিউকম নতুন তালিকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার জন্য কিছুদিন সময় চেয়েছে।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, টাকা ফেরতের বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে যাওয়া ২০২১ সালের ৩০ জুনের পরের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো নানা ধরনের মামলায় জড়িয়েছে এবং গত বছরের ৩০ জুনের আগে আটকে যাওয়া টাকার ব্যাপারে কিছু করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারের বাইরে।
যেসব প্রতিষ্ঠান একেবারেই ফেরত দেয়নি : মোট ২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠান কিছু গ্রাহকের টাকা ফেরত দিলেও বাকি ১৪টি ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেনি।
এগুলো হচ্ছে- ইভ্যালি, সিরাজগঞ্জ শপ, নিডস, টোয়েন্টিফোর টিকেটি, ই-অরেঞ্জ, উইকুম, আকাশ নীল, প্রিয় শপ, আলাদিনের প্রদীপ, আমার বাজার, আস্থার প্রতীক, বাড়ির দোকান ডট কম, নিরাপদ ও ইনফিনিটি মার্কেটিং লিমিটেড।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকা বলছে, ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা বিকাশ, নগদ ও এসএসএলে আটকে আছে ২৫ কোটি ৮৫ লাখ। এসএসএলে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের আছে ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।